- যাতায়াতে সুবিধা
- দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যায়
- সময় বাঁচে
- আনুপাতিক হারে ভাড়াও কম
সুমন চৌধুরী
চট্টগ্রাম: দু চাকার যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল থেকে ভালো রোজগার হচ্ছে। শিক্ষিত, বেকাররা এই পেশার মাধ্যমে দৈনিক হাজার ১২শ’ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করে একজন রাইডার। এর জন্য ৩শ’ টাকার পেট্রোল জ্বলে। সবখরচ বাবদ এক হাজার টাকা পর্যন্ত জমা থাকে বলে জানিয়েছে রাইডাররা।
মালিক জমা না থাকার কারণে বাড়তি কোনো চাপ নেই। আইন শৃঙ্খলাবাহীনির মামলার হয়রানিও কম। হিসাব মতে, প্রতি মাসে একজন রাইডার কমপক্ষে ত্রিশ হাজার টাকা রোজগার করে। আর বছরে মোট টাকার পরিমাণ তিন লাখ ষাট হাজার টাকা। অনেকে এটিকে পেশাদারি হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আবার অনেকে পারটাইম।
দেখা গেছে একটি সিএনজি অটোরিকশা চালক থেকেও এদের রোজগার গড়ে অনেক বেশি। কারণ চৌদ্দ লাখ টাকার একটি সিএনজি অটোরিকশায় মালিক জমা এক হাজার টাকা, দৈনিক ‘পাঁচশ থেকে ছয়শ’ টাকার গ্যাস লাগে। নিজের পাঁচশ’ টাকা বেতন তুলতে হলে তাকে অন্তত আড়াই হাজার টাকা পরিমাণ ভাড়া মারতে হবে। সে দিক থেকে একজন রাইডার তিনশ’ টাকার পেট্রোল ভরে ভাড়া মারছে দেড় হাজার টাকা প্রায়।
রাইডসে পুঁজি কি?
রাইড শেয়ারিংয়ে সাধারণত একটি মোটর সাইকেল ও দুটি হেলম্যাটের দরকার হয়। গাড়ির কাগজপত্র স্বয়ং সম্পূর্ণ থাকতে হবে এবং চালককে অবশ্যই লাইসেন্সধারী হতে হবে। এগুলো ছাড়া কাউকে অ্যাপসে নিবন্ধন করা হয় না। এক্ষেত্রে দেখতে মোটামুটি সুন্দর, বসতে আরামদায়ক ও জ্বালানিতে সাশ্রয় এমন মোটর সাইকেল কিনতে হয়। থাকতে হবে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন।
রাইডার রাজন বলেন, প্রতিদিন বাজার ভালো যায় না। গাড়ির সংখ্যাও আগের চাইতে বেড়েছে। প্রথম দিকে রাইডস ব্যবহার করার জন্য মানুষের চাহিদা বেশি ছিল। করোনার পর থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এটির ব্যবহারও কমেছে।
রাইডসে সুবিধা :
রাইডস শেয়ারিংয়ে যাতায়াতে সুবিধা রয়েছে। সময় বাঁচে এবং দ্রত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব। দু চাকার বাহন হওয়াতে চিপা গল্লি দিয়ে যাওয়া আসা করা যায়। এছাড়া অ্যাপসের গন্তব্যস্থল ও ভাড়ার ব্যাপার সিদ্ধান্ত হয় এবং নির্ধারিত জায়গায় এসে হাজির হন রাইডাররা। ঝুঁকিও থাকে কম। পাশাপাশি যানজটের দুর্ভোগ তেমন পোহাতে হয় না। ভাড়া নগদে না থাকলে বিক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়। এক এক জনে চারটা অ্যাপস নিয়ে ভাড়া মারতে পারে সিএনজি অটোরিকশাতে এ ধরণের সুবিধাগুলো পাওয়া যায় না।
দেশে সর্বপ্রথম রাইড শেয়ারিং চালু করে ‘পাঠাও’। পরে মাঠে নামে ওবাই, উবার ও সহজ।প্রতিযোগিতার বাজারে ‘পাঠাও’ রাইড শেয়ারিং টপে থাকলেও বাকি দুই কোম্পানি ব্যবসায় তেমন সুবিধা করতে পারেনি। নগরীতে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার রাইডস রয়েছে। শিক্ষিত, বেকাররা ছাড়াও এই পেশায় রয়েছেন চাকরিজীবীরাও। অ্যাপসের মাধ্যমে প্রথমে এই সিস্টেম চালু হলেও করোনার পর অ্যাপস ব্যবহার ছাড়াই চলছে। সড়কের পাশে মোটরসাইকেল নিয়ে দর কষাকষি চোখে পড়ার মতো।
যদিও রাইড শেয়ারিং চালু হওয়ার পর সিএনজি অটোরিকশা চালকদের ভাড়া কমতে থাকে। এক পর্যায়ে যাত্রীবাহি দুই চাকার বাহনটির কার্যক্রম বন্ধের দাবি উঠে। সবশেষে সিএনজি অটোরিকশাও ‘ওবাই’র মাধ্যমে ভাড়ায় চালিত করে। কিছুকিছু প্রাইভেট কারও অ্যাপসের মাধ্যম চালু করে।
‘পাঠাও’ রাইডার ফেরদৌস জানায়, গার্মেন্টেসে বিশ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতাম। দুই বছর আগে শিপম্যান্ট না থাকাতে গার্মেন্টস বন্ধ করে দেয়। পরে একটি মোটরসাইকেল কিনে অ্যাপসের মাধ্যমে রোজগারের পথ বেছে নিই। আল্লাহর রহমতে ভালই আয় হচ্ছে।