নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সমুদ্র উপকূল অতিক্রমের সনদবিহীন লাইটার জাহাজ বরাদ্দ দিচ্ছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল ( ডব্লিউটিসি )। এর প্রতিবাদে পণ্যের এজেন্টরা সোমবার কোন জাহাজ বরাদ্দ নেয়নি। আজ মঙ্গলবারও তারা এ ব্যাপারে অনড় রয়েছে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে বে ক্রসিং অনুমতিবিহীন জাহাজ বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে।
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সমুদ্র উপকূল অতিক্রমের সনদবিহীন লাইটার জাহাজ বরাদ্দ দিচ্ছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল ( ডব্লিউটিসি )। এর প্রতিবাদে পণ্যের এজেন্টরা সোমবার কোন জাহাজ বরাদ্দ নেয়নি। আজ মঙ্গলবারও তারা এ ব্যাপারে অনড় রয়েছে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে বে ক্রসিং অনুমতিবিহীন জাহাজ বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের জাহাজ তাদেরকে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন করেছে। অপরদিকে, বহির্নোঙরে চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এসব জাহাজ বরাদ্দের ব্যাপারে ডব্লিউটিস ‘র একটি গোষ্ঠি মরিয়া।
ডব্লিউটিসি এবং কার্গো এজেন্টদের এই বিরোধে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। বেশ কয়েকটি মাদারভেসেল পণ্য নিয়ে বহির্নোঙরে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। একদিনে প্রতিটি মাদার ভেসেলের ডেমারেজ ৬ লাখ ডলার
বড় বড় যেসব জাহাজ আমদানি পণ্য নিয়ে আসে তার সবগুলো সরাসরি জেটিতে এসে ভিড়তে পারে না। সিমেন্ট ক্লিংকার, পাথর, খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য বাল্ককার্গোবাহি এসব জাহাজ বহির্নোঙরে অবস্থান নিয়ে কিছু পণ্য লাইটার করে এরপর ভিতরে আসে। কোন কোন জাহাজ সমূদয় পণ্য লাইটার করে বহির্নোঙর থেকে ফিরে যায়। এই লাইটারিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জাহাজ সরবরাহ করে ডব্লিউটিসি। আমদানিকারকদের প্রতিনিধিরা সংস্থাকে তাদের চাহিদার ব্যাপারে জানায়। এরপর প্রতিদিন ডব্লিউটিসির বার্থিং সভায় জাহাজ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সব জাহাজ সারা বছর বহির্নোঙরে উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে পণ্য লাইটারিংয়ের উপযুক্ত নয়। এ ধরনের জাহাজ অহরহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পণ্যের এজেন্টরা, আমদানিকারকরা। বে ক্রসিংয়ের অনুমতি ও সার্ভেসনদ না থাকা এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস হালনাগাদ হালনাগাদ না থাকার কারণে দুর্ঘটনাকবলিত এসব জাহাজের বিপরীতে কোন বিমা দাবি আদায় করা যায় না।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বে ক্রসিংয়ের অনুমতিবিহীন জাহাজ বরাদ্দে। তা সত্ত্বেও ডব্লিউটিসি এ ধরনের জাহাজ বরাদ্দ চাপিয়ে দিচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের ২০১২ সালের পরিপত্র অনুযায়ী বে ক্রসিং অনুমতিবিহীন কোন জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর হতে সমুদ্র উপকূল অতিক্রম করতে পারবেনা। এ ধরনের জাহাজগুলো ডুবে গেলে আমদানিকারক ইন্সুরেন্স দাবি আদায় করতে পারে না। কার্গো এজেন্টরা সমুদ্র উপকূল অতিক্রমের সনদ বিহীন জাহাজ বরাদ্দ বন্ধ করার জন্য অনেকবার ডব্লিউটিসিকে অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু ডব্লিউটিসি’র সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠির স্বার্থে তা বন্ধ করা হয়নি। বে ক্রসিং এর অনুমতিবিহীন প্রায় ৩০০ জাহাজ ডব্লিউটিসির আওতায় চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কয়েকজন কার্গো এজেন্ট জানান, বে ক্রসিং সনদবিহীন জাহাজের কারণে ক্ষতির পর ক্ষতিতে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমদানিকারকরা তাদের পণ্যের ক্ষতিপূরণ বাবৎ বিশাল অংকের ভাড়া সমন্বয় করেছেন। কার্গো এজেন্টরা তাতে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কারও কারও ব্যবসা লাটে ওঠার উপক্রম হয়েছে।
ডব্লিউটিসি কার্গো এজেন্টদের জানিয়ে দিয়েছে যে বে ক্রসিংবিহীন জাহাজ না নিলে অন্য জাহাজও বরাদ্দ দেয়া হবে না। । এ অবস্থায় সোমবার এজেন্টরা জাহাজ বরাদ্দ নেয়নি। মঙ্গলবারও নেয়নি। ডব্লিউটিসি তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। আর এজেন্টরাও তাদের সিদ্ধান্তে অনড়।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল ( ডব্লিউটিসি )’এর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বে ক্রসিংবিহীন জাহাজের ব্যাপারে হঠাৎ করে কার্গো এজেন্টদের চলমান অবস্থান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জাহাজের যখন সংকট থাকে তখন বে ক্রসিংবিহীন জাহাজ পাওয়ার জন্য তাদের তদবিরের শেষ থাকে না। আর বর্তমান সময়ে বিপূল সংখ্যক লাইটার জাহাজ। কার্গো এজেন্টদের অনেকের রয়েছে প্রচুর সংখ্যক জাহাজ। যাতে এগুলো অধিকহারে ট্রিপ পায় সে লক্ষ্যে তাদের বর্তমান কর্মসূচি।