Home Second Lead নগদ ডলারের দর বেড়ে প্রায় ১০০ টাকা

নগদ ডলারের দর বেড়ে প্রায় ১০০ টাকা

আইএফআইসি ব্যাংক নগদ ডলার বিক্রি করেছে ৯৯ দশমিক ৯০ টাকায়। অর্থাৎ ডলার এন্ড্রোসমেন্টের খরচ ও ভ্যাটসহ ১০০ টাকার বেশি পড়ছে। ইবিএল নগদ ডলার বিক্রি করেছে ৯৯ দশমিক ৫০ টাকায়।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা:  বৃহস্পতিবার আন্তঃব্যাংক ডলারের দর ৫০ পয়সা বেড়ে ৯৪ দশমিক ৪৫ টাকা হয়। এর আগে সবশেষ গত বুধবার আন্তঃব্যাংক ডলারের দর ৫০ পয়সা বেড়ে ৯৩ দশমিক ৯৫ টাকা হয়। অর্থাৎ চলতি জুলাই মাসে এখন পর্যন্ত ডলারের আন্তঃব্যাংক দর ১ টাকা বেড়েছে। এর আগের দুই মাসে (মে-জুন) ডলারের আন্তঃব্যাংক দর বেড়েছে ৬ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ডলারের দরবৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, ‘মুদ্রা বিনিময় হার ঠিক হয় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী। গতকাল ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। সামনে ডলারের চাহিদা আরও বাড়বে। এ কারণে আন্তঃব্যাংক দর বাড়ানো হয়েছে।’আন্তঃব্যাংক ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল ব্যাংকগুলো তাদের আমদানি পর্যায়ের গ্রাহকদের কাছ থেকে ডলারের দর রেখেছে ৯৪ দশমিক ৫০ টাকা। তবে নগদ ডলারের দর বেড়ে প্রায় ১০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

গতকাল আইএফআইসি ব্যাংক নগদ ডলার বিক্রি করেছে ৯৯ দশমিক ৯০ টাকায়। অর্থাৎ ডলার এন্ড্রোসমেন্টের খরচ ও ভ্যাটসহ ১০০ টাকার বেশি পড়ছে। ইবিএল গতকাল নগদ ডলার বিক্রি করেছে ৯৯ দশমিক ৫০ টাকায়। তবে নগদ ডলার না নিয়ে কার্ডে ডলার যোগ করলে এক ডলারের বিপরীতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৫ টাকা। তবে অনেকেই ব্যাংক বা মানি চেঞ্জারের কাছ থেকে নগদ ডলার না কিনে মতিঝিল ও দিলকুশা এলাকার অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ডলার কেনেন বলে জানা যায়। এ ধরনের ডলার কেনাবেচা আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা অনেক সময় গোপনে এ ধরনের ডলার বেচাকেনা করে থাকেন। তাতে অনেকে নগদ ডলার ব্যাংকের থেকে ২০-৫০ পয়সা বেশি দরে বিক্রি করতে পারেন। অনেকের ডলার এন্ড্রোসমেন্টের কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় বা ব্যাংকের আনুষ্ঠানিকতা এড়াতে এ ধরনের অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডলার কিনে থাকেন।

এ ধরনের ব্যবসায়ীরা ১০২ টাকায় ডলার বিক্রি করছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে মতিঝিল ব্যাংকপাড়ায়। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকে এখনো ১০০ টাকা ছাড়ায়নি ডলার। ফলে বেশি দামে অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডলার না কিনে ব্যাংকে আসার আহ্বান জানান তারা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবস্থার মধ্যে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কম এবং রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হওয়ার কারণে দেশে ইউএস ডলারের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডলারের দাম। এজন্য রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া আন্তঃব্যাংক দরের সঙ্গে ৫ পয়সা যোগ করে আমদানি পর্যায়ের ডলারের দর নির্ধারণ করে ব্যাংক। তবে এ দরের থেকে ৩-৪ টাকা বেশি দরে ডলার কিনতে হয় বলে অভিযোগ করছেন আমদানিকারকরা। অনেক ব্যাংক পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দর ১০১ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

বাজার ‘স্থিতিশীল’ করতে গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় নতুন অর্থবছরেও বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১ জুলাই শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১৮ দিনে ৬৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।