ডায়াবেটিসের কারণে কি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে? বর্তমান সময়ে এই প্রশ্ন অনেকেরই। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে তাতে বিগড়ে যেতে পারে হার্টও। রক্তে অতিরিক্ত শর্করা, ওবেসিটি, উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল সবই হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ফ্যাক্টর। এর মধ্যে ডায়াবেটিস আছে প্রথমেই। এখনকার সময় কমবয়সিরাই সবচেয়ে বেশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। সেডেন্টারি লাইফস্টাইলে অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়ার অভ্যাস, কম শরীরচর্চা, বেশি রাত অবধি জাগা এবং মধ্যরাতেও ভাজাভুজি খাওয়ার অভ্যাস, কম ঘুম ইত্যাদি নানা কারণে স্থূলত্ব বা ওবেসিটি বাড়ছে। এবং এর হাত ধরেই ডায়াবেটিস বাসা বাঁধছে শরীরে। আর এই ডায়াবেটিসই একসময় বিপজ্জনক পর্যায়ে গিয়ে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের কারণ হয়ে উঠছে।
ডায়াবেটিসের কারণে হার্টের রোগের ঝুঁকি কতটা বাড়তে পারে এবং এর থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায় কী সে নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন কলকাতার সিনিয়র ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট অ্যান্ড ডিভাইস স্পেশ্যালিস্ট ডা. দিলীপ কুমার। ডায়াবেটিসের কারণে হার্টে ব্লক হতে পারে, সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, হার্ট ফেলিওয়ের সম্ভাবনা অনেকগুণ বেড়ে যেতে পারে।
ডায়াবেটিস থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি কতটা বাড়ে?
ডায়াবেটিসে হৃদরোগের অন্যতম সাধারণ কারণ হল করোনারি ধমনীতে প্লাক বা কোলেস্টরল জমে যাওয়া। একে বলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস। এই রক্তনালিগুলি হার্টকে ঠিকঠাকভাবে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু যখন রক্তনালিগুলিতে কোলেস্টেরলের স্তর জমা হতে থাকে তখন রক্তসরবরাহ বাধা পায়। কোলেস্টেরল রক্তবাহী নালিগুলোকে সরু ও শক্ত করে ফেলে। তাই রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে রক্তচাপ বাড়ে এবং তার সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
সুস্থ থাকতে হলে কী করবেন
ডা. দিলীপ কুমার বলছেন, রক্তে সুগার লেভেল কতটা বাড়ছে তা নিয়মিত টেস্ট করা দরকার। সবসময়েই ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখতে হবে।
পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ব্লাড প্রেসার যেন কখনওই মাত্রা না ছাড়িয়ে যায়।
এইচবিএ ওয়ান সি ৬.৫ এর কম থাকতে হবে।
তিনি বলছেন, ডায়াবেটিস বশে রাখার কার্যকরী উপায় হচ্ছে ওবেসিটি ও লিপিড লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই এই ধরনের অসুখের মূলে। মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়া ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ। খাবারের পরিমাণ কমান। একবারে বেশি না খেয়ে বার বার অল্প অল্প করে খান। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ডায়াবেটিক হলে প্রতিদিন দু’বেলা সময় করে হাঁটার অভ্যাস করুন। শরীরের ওজন যদি বেশি বেড়ে যায় তাহলে তা ডায়াবেটিসকে ডেকে আনতে পারে। তাই দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গেই রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা টানা ঘুম জরুরি। লাইফস্টাইল মডিফিকেশনই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে।