বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে চলেছে। আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ৩ দিনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন ৩,২৩২ জন। এদের মধ্যে রবিবার ভর্তি হন ১ হাজার ৭১ জন, সোমবার ১ হাজার ৩৮৩ জন এবং মঙ্গলবার ভর্তি হয়েছেন ৬৭৮ জন।
চিকিৎসকরা বলেছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন, অস্বস্তিকর গরমে প্রতিবছরই এসময়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। তবে এবার অন্য বছরের তুলনায় রোগীর সংখ্যা খুব বেশি। তাই এর প্রকোপ থেকে বাচঁতে বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি বারবার হাত ধোয়া, বাইরের বাসি খোলা খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ তাদের।
ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় কী করণীয় জানতে চাইলে আইসিডিডিআরবির চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়ারিয়া আক্রান্তদের ক্ষেত্রে পানি শূন্যতা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আতঙ্কিত না হয়ে বেশি বেশি খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। বমি না হলে বাসায় রেখেই ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। বমি হলে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে। এছাড়া কোনো অবস্থাতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক না খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি, বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ তাদের।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, ওয়াসার পানি পানের আগে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। রাস্তায় বা খোলা জায়গার খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে হাত ভালো করে পরিস্কার করতে হবে। দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা খাবার বা বাসী খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
চৈত্রের তীব্র গরমে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়রিয়ায়। মঙ্গলবার আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের গিয়ে দেখা গেছে, রোগীর সংকুলান করতে না পেরে হাসপাতালের বাইরে দুটি তাঁবু টানিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে কিছুক্ষণ পর অ্যাম্বুলেন্স, সিএনজি করে একের পর এক রোগী আসছেন। কাউকে স্ট্রেচারে করে এনে হাসাপাতালে বিছানায় শোয়ানো হচ্ছে। কেউ বাইরে অপেক্ষা করছেন। এর মধ্যে জরুরি বিভাগের সামনে রোগী ও স্বজনদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৫ হাজার ৯০১ জন ডায়রিয়া আক্রান্তকে চিকিৎসা দেওয়া হয় আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে। ফেব্রুয়ারি মাসে এই সংখ্যা কিছুটা কমে আসে। এই মাসে ১০ হাজার ৩৪৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্তকে চিকিৎসা দেওয়া হলেও ১৫ মার্চ থেকে পরিস্থিতি পাল্টায়। প্রতিদিন গড়ে এগার’শর বেশি রোগী ভর্তি হয়। এর আগে গত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এ রকমই একটি প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, যা একেবারে মহামারীর রূপ ধারণ করে। সেটি স্থায়ী হয়েছিল মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।