ঢাকা: জেকেজি হাসপাতালে করোনার ভুয়া রিপোর্ট তৈরির ঘটনায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর পরই হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা নিয়েছে।
রবিবার (১২ জুলাই) ডা. সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিএমপির তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে ডাকা হয়। সাবরিনাকে চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে গণমাধ্যমকে জানান ডিসি হারুন-অর-রশীদ।
জেকেজি হাসপাতালে করোনার ভুয়া রিপোর্ট তৈরির বিষয়ে মুহূর্তেই নিজের বক্তব্য অস্বীকার করছেন প্রতিষ্ঠানটির অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। আরিফ চৌধুরীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও অস্বীকার করেছেন সাবরিনা।
করোনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে গ্রেফতার হওয়া জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফ চৌধুরীর প্রতারণার নেপথ্যে ছিলেন তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। তাদের এক ল্যাপটপেই পাওয়া গেছে ১৫ হাজারেরও বেশি করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক সাবরিনার দাপটেই আরিফ চৌধুরী করোনা পরীক্ষার অনুমতি বাগিয়ে নেন স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে। জেকেজির চেয়ারম্যান হিসেবে সব যোগাযোগ রক্ষা করতেন সাবরিনাই।
তদন্ত ও তদন্ত তদারকি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা মহামারীর শুরুর দিকে ডা. সাবরিনার তদবিরে জেকেজি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ বাগিয়ে নেয়। এখান থেকে করোনা টেস্টের নামে ভুয়া সদন দেওয়া শুরু করেন আরিফুল।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৪৪টি নমুনা সংগ্রহ বুথ বসিয়ে ও হটলাইন খুলে নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি কমপক্ষে ১৬ হাজার মানুষকে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ দিয়েছে। গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার কক্ষে বসেই এসব মনগড়া সনদ তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠানো হতো।
বুথের বাইরে হটলাইনের মাধ্যমে ‘বিশ্বস্ত এজেন্ট’ দিয়ে বাসা বাড়িতে গিয়েও নমুনা সংগ্রহ করতেন জেকেজি কর্মীরা।
প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নেওয়া হয় সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি নিতে থাকে ১০০ ডলার। করোনা টেস্ট কারবার করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা।
গত ২৩ জুন করোনার মনগড়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে তেজগাঁও থানা পুলিশ আরিফুলসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
আরিফ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় প্রতারণা জালিয়াতি, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলাসহ নানা অভিযোগে চারটি মামলা করেছে পুলিশ।
ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ২০১৬ সালে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন পোর্টালে। সেখানে বলেছিলেন নিজের মনের অনেক কথা। বলেছিলেন চিত্রনায়িকা হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছেন চিকিৎসক। সুনাম কুড়িয়েছেন। যদিও সেই সুনামের তরী এখন ডুবে গেছে।
নায়িকা হতে চেয়েছিলেন
ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ২০১৬ সালে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন পোর্টালে। সেখানে বলেছিলেন নিজের মনের অনেক কথা। বলেছিলেন চিত্রনায়িকা হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছেন চিকিৎসক। সুনাম কুড়িয়েছেন। যদিও সেই সুনামের তরী এখন ডুবে গেছে।ডা. সাবরিনা সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি নায়িকাও হতে চেয়েছিলাম একসময়। হা হা হা। তবে বাবার কড়া শাসনের কারণে আর সেটি হয়ে ওঠেনি। নায়িকা হওয়ার জন্য প্রস্তাবও পেয়েছিলাম। লুকিয়ে অভিনয়ের রিহার্সালে যেতাম। তবে যেদিন ফাইনাল শুটিং হবে সেদিন বাবা বুঝে গেলেন সব কিছু। আমার আর অভিনয় করা হলো না।