বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ওমিক্রন না ডেল্টা, কে বেশি সংক্রামক সে নিয়ে বিজ্ঞানীমহলে জোর চর্চা চলছে। কিছুদিন আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র শীর্ষ বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন বলেছিলেন, ওমিক্রন কতটা ক্ষতিকারক তা এত তাড়াতাড়ি বলা সম্ভব নয়। ডিসেম্বরের শেষ থেকেই এই ভাইরাসের সংক্রামক ক্ষমতার পরিচয় মিলবে। হু-প্রধান টেড্রস অ্যাডহানাম ঘেব্রেইসাস সোমবার একটি কনফারেন্সে দাবি করেছেন, কোভিডের সুপার-স্প্রেডার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের চেয়েও দ্রুত ছড়াতে পারে ওমিক্রন। কারণ এই ভাইরাস প্রজাতির স্পাইক প্রোটিতে র্যান্ডম এবং র্যাপিড মিউটেশন হচ্ছে।
করোনার ডবল ভ্যারিয়ান্ট নিয়ে একসময় চিন্তা বেড়েছিল। এর পর ডবল ভ্যারিয়ান্টের নানা রকম উপপ্রজাতি তাণ্ডব করেছে বিশ্বের নানা দেশে, যার মধ্যে আলফা, বিটা, গামা ও অতি সংক্রামক ডেল্টা প্রজাতি রয়েছে। এই ডেল্টার নানা শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তার ওপর এখন সার্স-কভ-২ ভাইরাসের নতুন করে মিউটেশন অর্থাৎ জিনের বিন্যাসের বদল হয়ে ওমিক্রন নামে কোভিডের আরও একটি সংক্রামক প্রজাতির আবির্ভাব হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওমিক্রন বহুবার তার রূপ বদলে ফেলেছে। হু প্রধান বলছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টে এখনই ৫০ রকম মিউটেশন হয়েছে। যার মধ্যে স্পাইক প্রোটিনেই (s) ৩০ বার অ্যামাইনো অ্যাসিডের কোড বদলে গেছে। স্পাইক প্রোটিন যে অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিন্যাসে তৈরি তার অদলবদল হলে ভাইরাসের গঠন ও চরিত্র বদলে যায়। ভাইরাস দ্রুত ট্রান্সমিশন বা মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার জন্য প্রোটিনের বিন্যাসে এই বদল নিয়ে আসে। তখন এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়িয়ে পড়া অনেক সহজ ও দ্রুত হয়। তেমনটাই হয়েছে ওমিক্রনে।
হু-র ভাইরাস বিশেষজ্ঞ আব্দি মাহমুদ বলছেন, ভ্যাকসিন দিয়েই এই ভাইরাসকে রোখা সম্ভব, তবে ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টে যেভাবে দ্রুত মিউটেশন হয়ে চলেছে তাতে ভ্যাকসিন কতদূর কার্যকরী থাকবে সেটাই চিন্তার ব্যাপার। সেক্ষেত্রে টি-কোষ এই ভাইরাল ভ্যারিয়ান্টকে কাবু করতে পারে। বাইরে থেকে মনোক্লানাল অ্যান্টিবডির চিকিৎসাতেও কাজ হতে পারে।
ডেল্টার সংক্রমণে যেমন শ্বাসযন্ত্রের রোগ বা রেসপিরেটারি সিন্ড্রোম দেখা গিয়েছিল রোগীদের মধ্যে, ওমিক্রনের সংক্রমণে তেমনটা এখনও দেখা যায়নি। কোভিডের এই নয়া প্রজাতির সংক্রমণের উপসর্গও কিছু আলাদা। ওমিক্রন পজিটিভদের সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে—প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা, গায়ে-হাত পায়ে ব্যথা, ক্লান্তি এবং গলা শুকিয়ে যাওয়া ও গলা ব্যথা। ওমিক্রন আক্রান্ত হলে পালস রেট বাড়ছে, সেই সঙ্গেই বাড়ছে শরীরের তাপমাত্রা। সংক্রমণ বেশি হলে প্রচণ্ড ক্লান্তি, মাথাব্যথা ও গায়ে ব্যথা শুরু হচ্ছে।