বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট সম্পর্কে আশঙ্কার কথা শোনাল মার্কিন স্বাস্থ্য দফতর। তাদের ধারণা, আগামী দিনে ওই ভ্যারিয়ান্টে সংক্রমিত হলে মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়বে। ওই ভ্যারিয়ান্ট হবে চিকেন পক্সের মতোই ছোঁয়াচে। আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দু’দফা টিকা নেওয়ার পরেও কেউ কোভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ছড়াতে পারেন। এমনকি যিনি ভ্যাকসিন নেননি, তাঁর মতোই ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের বাহক হতে পারেন ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষও।
বৃহস্পতিবার আমেরিকার ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ সংবাদপত্রে সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তার একটি কপি এসেছে আমেরিকার অপর সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর কাছে। সংস্থার ডিরেক্টর রোচেল্লি পি ওয়ালেনস্কি বলেছেন, সার্স, মার্স, ইবোলা, সাধারণ সর্দি, ফ্লু এবং স্মলপক্সের চেয়েও বেশি ছোঁয়াচে কোভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট। তার প্রকৃত নাম বি.১.৬১৭.২। ওই ভ্যারিয়ান্ট গুরুতর অসুস্থতার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতে, ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ছড়ানোর পরে কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ধরনই পাল্টে গিয়েছে। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আমেরিকায় ১৬ কোটি ২০ লক্ষ ভ্যাকসিনেটেড মানুষের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩৫ হাজার জনের শরীরে কোভিডের লক্ষণ দেখা যায়।
ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের জন্য কোভিড সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। সেখানে অতিমহামারীর ফোর্থ ওয়েভের সূচনা হয়েছে। ওই অঞ্চলে টিকাকরণের হার কম। তাই দ্রুত ছড়াচ্ছে কোভিড। বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছে হু। সংস্থার মুখপাত্র বলেছেন, মরক্কো থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত ২২টি দেশের মধ্যে ১৫ টিতেই কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হু-এর পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “পশ্চিম এশিয়ায় কোভিড সংক্রমণের জন্য দায়ী ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট।”
হু-র মুখপাত্র আহমেদ অল মানধারি বলেন, “যাঁরা নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে, তাঁদের বেশিরভাগই টিকা নেননি।” হু-র হিসাবমতো, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ অবধি পশ্চিম এশিয়ায় টিকা নিয়েছেন মাত্র ৪ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ। তাঁরা ওই অঞ্চলের মোট বাসিন্দার ৫.৫ শতাংশ মাত্র। সেখানে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৫ শতাংশ। মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৫ শতাংশ। এখন পশ্চিম এশিয়ায় রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন ৩ লক্ষ ১০ হাজার মানুষ। মারা যাচ্ছেন ৩৫০০ জন। উত্তর আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে কোভিডে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে তিউনিসিয়ায়।