বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভিপিএন এর পূর্ণরূপ হলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। এটি ইন্টারনেটে আপনার ও অন্য একটি নেটওয়ার্কের মাঝে সিকিউর কানেকশন তৈরি করে দেয়। অধিকাংশ মানুষ মূলত অঞ্চলভিত্তিক ব্লক করা সাইটগুলোতে প্রবেশ করতে, তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এবং সেনসিটিভ কন্টেন্ট ব্রাউজ করার সময় নিজেকে ট্রেস করা থেকে বাঁচাতেই ভিপিএন ব্যবহার করে।
আজকাল ভিপিএন এর ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু অনেকেই আজ যে কারণে ভিপিএন ব্যবহার করে সেই কারণে ভিপিএন এর জন্ম হয়নি। ভিপিএন তৈরি করা হয়েছিল ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রাইভেট নেটওয়ার্কগুলোকে নিরাপদে সংযুক্ত করার জন্য।
ভিপিএন আপনার নেটওয়ার্ক ট্রাফিককে অন্য কোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফরোয়ার্ড করে দেয়। প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমেই বিল্ট ইন VPN সাপোর্ট আছে।
কিভাবে ভিপিএন আপনাকে সাহায্য করতে পারে?
আপনি যখন আপনার ডিভাইসটিকে ভিপিএনে কানেক্ট করেন তখন এটা অন্য কোন একটা কম্পিউটারে (সার্ভারে) নিজেকে সংযুক্ত করে এবং ইন্টারনেটের সাথে আপনার যোগাযোগের জন্য একটি গোপন রাস্তা বা সুড়ঙ্গ তৈরি করে। আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) এই সুড়ঙ্গের উপস্থিতি বুঝতে পারলেও এর মধ্যে ঢুকতে পারবেনা। ফলে আপনি কোন সাইট ব্রাউজ করছেন কিংবা কী ডেটা পাস করছেন তা আইএসপি জানতে পারবে না। তখন আপনার দেশে বা আইএসপিতে যদি কোন সাইট ব্লক করা থাকে সেই সাইটটিও আপনি ভিপিএন ব্যবহার করে ব্রাউজ করতে পারেন। আর এই সব ডেটা ভিপিএন ব্যবহারের সময় এনক্রিপ্টেড হয়ে যায়।
কি কি কাজে ভিপিএন ব্যবহার করা হয়?
ভিডিও ও অডিও স্ট্রিমিং সাইটগুলোতে নির্দিষ্ট দেশের জন্য স্পেসিফিক কন্টেন্টগুলো যে কোন দেশ থেকেই ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) এর মাধ্যমে ব্রাউজ করতে পারবেন। যেমন ধরুন স্পটিফাই সাইট থেকে বাংলাদেশে বসে আপনি গান শুনতে পারবেন না। কিন্তু চাইলেই ইউএস বা অন্য কোন দেশ যেখানে স্পটিফাই এর সার্ভিস আছে সেসব দেশের আইপিযুক্ত সার্ভারে ভিপিএন দিয়ে কানেক্ট করে আপনিও স্পটিফাই সার্ভিস বাংলাদেশে বসেই ব্যবহার করতে পারবেন।
নিজের তথ্য নিরাপদ রাখতে: আপনি যদি পাবলিক প্লেসে ফ্রি ওয়াই-ফাই হটস্পট ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ব্রাউজিং ডেটা সেইম নেটওয়ার্কে থাকা অন্যান্য মানুষ ট্রেস করতে পারে যদি সে এই বিষয়ে এক্সপার্ট হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে বাঁচাবে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN)। আপনি ভিপিএন দিয়ে কানেক্ট করলে আপনার ওয়াইফাই সংযোগে কেউ আড়ি পাতলে কিংবা এমনকি আপনার আইএসপি নিজেও শুধু একটা প্রাইভেট নেটওয়ার্কই দেখবে। এর ভিতরে যে সব ডেটা পাস হচ্ছে সেসবের নাগাল পাবে না।
নিজের প্রকৃত লোকেশন গোপন করতে: বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ট্র্যাকিং থেকে বাঁচতে আপনি যদি আপনার প্রকৃত লোকেশন গোপন রেখে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তাহলে ভিপিএন আপনাকে সেই সুবিধা দিবে। এছাড়া আপনি হয়তো জানেন যে চীনে সরকারীভাবে অনেক সাইটই বন্ধ করে রাখা আছে (এমনকি ফেসবুকও)। চায়নিজরা ভিপিএন ব্যবহার করেই প্রয়োজন পড়লে সেসব সাইট ব্রাউজ করে পুরো ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত থাকে।
টরেন্ট ব্যবহারের সময় আপনার গোপনীয়তা রক্ষার্থে: টরেন্ট থেকে ফাইল নামানোর ক্ষেত্রে ট্রেসিং এড়াতে VPN ব্যবহার করতে পারেন। এমনকি আপনি যদি লিগ্যাল টরেন্ট ও ডাউনলোড করেন তাহলেও আপনার আইএসপি বেশি ট্রাফিকের ভয়ে আপনার কানেকশন স্লো করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ভিপিএন দিয়েই আপনি ট্রেস থেকে বাঁচতে পারেন।
প্রায় সব ভিপিএন প্রোভাইডারেরই ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহারের জন্য ডেস্কটপ, এন্ড্রয়েড, আইওএস অ্যাপ ও ব্রাউজার এক্সটেনশন রয়েছে। এগুলো সাধারণত ক্রস প্লাটফর্ম সার্ভিস। এগুলো ব্যবহার করাও খুবই সহজ। শুধুমাত্র তাদের সাইট এ গিয়ে সাইনআপ করলেই হয়ে গেলো।
-অর্ডিনারি আইটি