বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমকে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এগারো কোটির বেশি নাগরিকের ৪৬ ধরণের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে জিয়াউল আলমকে।
নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় এক আত্মীয় বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বুধবার (৫ মার্চ) সিআইডির একটি দল পাঁচলাইশ থানা থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করার পরিকল্পনা রয়েছে সিআইডির।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান জানিয়েছেন, ‘জিয়াউল আলমকে তার এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই আত্মীয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক।’
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি আশরাফুজ্জামান দৌলা জানিয়েছেন, এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসার অনুমতি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় একটি মামলা করা হয়। এ মামলায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বছরের ৯ অক্টোবর রাজধানীর কাফরুল থানায় এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা এনআইডির তথ্য ফাঁস ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) যাচাই সেবা গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ অনুসারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পারবে না।
১১ কোটির বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব তথ্য ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সরবরাহ করে। ডিজিকন এসব তথ্য পরিচয় ডটকম নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০টির বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করছে। ৫ বছর ধরে এসব তথ্য বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।