বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: তাড়াইলে উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান রতন (৬৫) নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। এই ঘটনার পর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।
রাউতি ইউনিয়নের বানাইল বাজারে রোববার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে তাড়াইল থানার ওসি সাব্বির রহমান জানান।
ঘটনায় পুরো উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দুপুরে নিহত রতনের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে রেখেই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নেতাকর্মী। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. ছাইদুজ্জামান মোস্তফার নেতৃত্বে হাসপাতাল গেইট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
১৫ জানুয়ারি তাড়াইল উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা। সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন লিটন এবং সাইদুজ্জামান মোস্তফা। নিহত আবুল হাসান রতন ছিলেন সাইদুজ্জামান মোস্তফার অনুসারী। অপরদিকে রতনের ভাতিজা গিয়াস উদ্দিন আবার সারোয়ার হোসেন লিটনের অনুসারী।
শনিবার রাতে বানাইল বাজারে সারোয়ার হোসেন লিটন একটি সভা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন তার অনুসারী গিয়াস উদ্দিন। চাচা-ভাতিজার মধ্যে আগে থেকেই দলীয় বিরোধ ছিল। শনিবার রাতের সভাকে কেন্দ্র করে সেটি আবার সামনে আসে। রাতে চাচা-ভাতিজার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে এতে দু্পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
সকালে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা বানাইল বাজারে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে আবুল হাসান রতন গুরুতর আহত হন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তাড়াইল থানার ওসি সাব্বির রহমান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ আছে।
তাড়াইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শ্যামল মিয়া জানান, “বাঁশ দিয়ে বানানো অস্ত্রটি দিয়ে আবুল হাসান রতনের ডান বুকে আঘাত করা হয়েছে। একটি আঘাতই করা হয়েছে। এতে তিনি মারা গেছেন। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হসপাতালে পাঠানো হবে।”
এদিকে এ ঘটনার পর জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসান শামু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ জানুয়ারির উপজেলা সম্মেলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান হয়েছে।
মীর কামরুল হাসান শামু সাংবাদিকদের বলেন, “সভাপতির নির্দেশে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।”