Home Second Lead তিউনিসিয়া উপকূলে নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয়

তিউনিসিয়া উপকূলে নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয়

উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের সাথে কথা বলছেন লিবিয়ার বাংলাদেশ দুতাবাসের কর্মকর্তারা। ছবি ফেসবুক

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৫ জন মাদারীপুরের এবং ৩ জন গোপালগঞ্জের।

লিবিয়া থেকে ইউরোপের উদ্দেশে নৌকায় সাগর পাড়ি দেয়ার সময় তারা এ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে: নিহত মাদারীপুরের পাঁচজনের সবার বাড়ি রাজৈর উপজেলায়। তারা হলেন– শেনদিয়া গ্রামের সজল; তার বাবার নাম জানা যায়নি। কদমবাড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের নয়ন বিশ্বাস, সরমঙ্গল গ্রামের মামুন সেখ; তার বাবার নাম জানা যায়নি, তেলিকান্দি গ্রামের কাজী মিজানুরের ছেলে কাজী সজীব এবং কেশরদিয়া গ্রামের কায়সার।

গোপালগঞ্জের তিনজনের সবাই মুকসুদপুর উপজেলার বাসিন্দা। তারা হলেন- বড়দিয়া গ্রামের দাদনের ছেলে রিফাত, ফতেহপট্রি গ্রামের রাসেল; তার বাবার নাম জানা যায়নি এবং গয়লাকান্দি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। পথে তিউনিসীয় উপকূলে গেলে মধ্যরাত ৪টা ৩০ মিনিটে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন ছিলেন নৌকার চালক।

দুর্ঘটনার পর ৫৩ জনের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ জন, সিরিয়ার ৫ জন, মিসরের ৩ জন ও নৌকা চালক রয়েছেন (মিশরীয় নাগরিক)।

ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ জন যাত্রী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। নিহত অপর ব্যাক্তি পাকিস্তানের নাগরিক।

এছাড়া মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার আমগ্রাম ইউনিয়নের মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে মনতোষ সরকার। পাসপোর্টবিহীন বাংলাদেশি রয়েছেন ৭ জন।

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌ-দুর্ঘটনায় উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের সার্বিক কল্যাণ ও মৃত্যুবরণকারীদের তথ্য নিশ্চিত করতে লিবিয়ার ত্রিপোলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি দল তিউনিসিয়ার জারজিস শহরে অবস্থান করছেন। নিহত বাংলাদেশিদের বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত এবং স্থানীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মরদেহ দেশে পাঠানোর জন্য দূতাবাস কাজ করছে।

উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিরা। ছবি ফেসবুক।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দুতাবাসের ফেসবুক পেজে যা বলা হয়েছে:

সাম্প্রতিক সময়ে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌ-দুর্ঘটনায় উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের সার্বিক কল্যাণ ও মৃত্যুবরণকারীদের তথ্য নিশ্চিত করতে দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মোঃ রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি টীম ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে তিউনিসিয়ার জারজিস শহরে পৌঁছেছেন। দূতাবাসের টীম ইতোমধ্যে নৌ-দুর্ঘটনায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের সাথে সাক্ষাৎ করে হতাহত বাংলাদেশিদের প্রাথমিক পরিচয় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন। অতীব দূঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে যে, বর্ণিত দুর্ঘটনায় নিহত নয়জন অভিবাসীর মধ্যে আটজন বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়াও নৌকাটি হতে মুমূর্ষু অবস্থায় একজনসহ মোট ২৭ জন বাংলাদেশিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে মাদারীপুর জেলার ০৫ জন এবং গোপালগঞ্জ জেলার ০৩ জন বাসিন্দা। মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশিদের প্রাথমিক পরিচয় নিম্নরূপঃ
০১) সজল, ঠিকানাঃ শেনদিয়া, খালিয়া, রাজৈর, মাদারীপুর।
০২) নয়ন বিশ্বাস, পিতাঃ পরিতোষ বিশ্বাস, ঠিকানাঃ কদমবাড়ি উত্তরপাড়া, কদমবাড়ি, রাজৈর, মাদারীপুর।
০৩) মামুন সেখ, ঠিকানাঃ সরমঙ্গল, খালিয়া, রাজৈর, মাদারীপুর।
০৪) কাজি সজীব, পিতা: কাজী মিজানুর, মাতা: রেণু বেগম, ঠিকানাঃ তেলিকান্দি, বাজিতপুর নতুন বাজার, রাজৈর, মাদারীপুর।
০৫) কায়সার, ঠিকানাঃ কেশরদিয়া, কবিরাজপুর, রাজৈর, মাদারীপুর।
০৬) রিফাত, পিতা: দাদন, ঠিকানাঃ বড়দিয়া, রাগদী, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ।
০৭) রাসেল, ঠিকানাঃ ফতেহপট্রি, দিগনগর, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ।
০৮) ইমরুল কায়েস আপন, পিতা: মোঃ পান্নু শেখ, মাতা: কামরুন্নাহার কেয়া, গয়লাকান্দি, গঙ্গারামপুর গোহালা, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ।
এছাড়াও মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার আমগ্রাম ইউনিয়নের মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে মনতোষ সরকার।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে নিহত বাংলাদেশিদের বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত এবং স্থানীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের মৃতদেহ দেশে প্রেরণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই লক্ষ্যে দূতাবাস তিউনিসিয়া এবং বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে। এছাড়াও বর্ণিত দুর্ঘটনায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের দেশে প্রেরণসহ তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে দূতাবাসের প্রচাষ্টা অব্যাহত রয়েছে।