Home First Lead ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচির প্রাক্কালে হঠাৎ টইটম্বুর তিস্তা

‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচির প্রাক্কালে হঠাৎ টইটম্বুর তিস্তা

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, লালমণিরহাট: ভারতে গজলডোবা ব্যারেজ খুলে দেওয়ায় উজান থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে ধেয়ে আসছে তিস্তার পানি। ডালিয়া ব্যারেজে খরা মৌসুমে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর পাড়ের কৃষক ও বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে জেগে থাকা বালুচর। জেগে উঠা বালুচরের রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল-বাদামসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ব্যারেজের চারটি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

ব্যারাজের অদূরে মূল নদীতে শনিবার সকালেও যেখানে ছিল ধূ ধূ বালুচর, সেখানে বিকাল থেকে বইছে স্বচ্ছ পানির ধারা। নদী হয়ে ওঠেছে টইটম্বুর।শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার পর থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বাড়তে শুরু করে। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫০ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)

 তিস্তার পানির ন্যায্য হিসাবের দাবিতে তিস্তা পারে ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। তারা বলেন, ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ তিস্তার পানি নিয়ে আমরা আন্দোলন করতে যাচ্ছি, ঠিক তখনই ভারত পানি ছাড়ছে। এটা ভারতের চাল। কারণ এ মৌসুমে কখনো ভারত পানি ছাড়ে না। বিকেল থেকে হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তা ব্যারাজ এলাকার বিভিন্ন চরগুলো ডুবে যাচ্ছে। ব্যারাজের পূর্ব দিকে শুকনো নদীতে যেখানে নদী রক্ষা আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে সেখানেও ছুঁই ছুঁই করছে পানি।

পানিশূন্য নদীর বুকে তিস্তা বিধৌত লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও নীলফামারী এ পাঁচ জেলার কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু এবং তিস্তা ব্যারাজসহ ১১ পয়েন্টে তাঁবু খাটিয়ে ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি একই সময়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

রংপুরের একটি হোটেলে শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু। দুদিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।

এ কর্মসূচি সফল করতে শনিবার বিকালে বিএনপির জেলা-মহানগর কার্যালয় থেকে দলের মহানগরের আহবয়াক সামসুজ্জামান সামু ও সদস্য সচিব মাহফুজ-উন-নবী ডনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা প্রচার মিছিল করেন। এ ছাড়া উত্তরের পাঁচ জেলার বিভিন্ন স্থানে জনসভা করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

শনিবার সন্ধ্যায় তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় স্কুলশিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, দলমত নির্বিশেষে তিস্তাকে বাঁচাতে যখন বৃহৎ কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি শেষ মুহূর্তে ঠিক তখন প্রতিবেশী ভারত আমাদের সঙ্গে অনেকটা পানি নিয়ে ‘নাটক’ শুরু করল।

তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, সপ্তাহখানেক থেকে যে পরিমাণ পানি উজান থেকে এসেছে এর চেয়ে শনিবার দুপুরে ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।