Home আগরতলা ত্রিপুরা: সব ঠিক, শ্যাম্পুটা ফুরিয়ে গেছে

ত্রিপুরা: সব ঠিক, শ্যাম্পুটা ফুরিয়ে গেছে

শোভন চক্রবর্তী

আগরতলা ( ত্রিপুরা ): মঙ্গলবার থেকে দু’দিনের জেলা সফরে বেরিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। শুধু প্রশাসনিক বৈঠক নয়, মুখ্যমন্ত্রী নিজে পৌঁছে যাচ্ছেন কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলিতে।.বুধবার ধলাই জেলার আমবাসার একটি কোভিড কেয়ার সেন্টারে পৌঁছে একটু দূর থেকে রোগীদের সঙ্গে কথোপকথনের মাঝেই অদ্ভুত অনুযোগ শুনতে হল বিপ্লবকে।

এদিন আমবাসার কোভিড কেয়ার সেন্টারে গিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, “সব ঠিক আছে তো? কোনও সমস্যা হচ্ছে না তো?” ঠিক সেই সময়েই জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে এক করোনা আক্রান্ত বলেন, “এমনিতে সব ঠিকই আছে স্যার! কিন্ত শ্যাম্পুটা শুধু ফুরিয়ে গেছে!”

কোভিড আক্রান্তের এহেন অনুযোগ শুনে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানো নিরাপত্তারক্ষী থেকে আধিকারিকরাও হাসি চাপতে পারেননি। তবে বিপ্লববাবুর কোনও অভিব্যক্তি লক্ষ্য করা যায়নি। সেখানকার আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েই কোভিড কেয়ার সেন্টার থেকে খোয়াই জেলার উদ্দেশে রওনা দেয় তাঁর কনভয়। তার আগে প্রশাসনিক বৈঠকও করেন জেলাশাসকের দফতরে।

কোভিড কেয়ার সেন্টারে থাকা রোগীদের এহেন বায়নাক্কা নতুন নয়। তবু আমবাসার রোগীরা তো শুধু শ্যাম্পুর আবদার করেছেন। শুরুতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলি থেকে আবদার আসত, টিভি লাগিয়ে দিন, একটু মদ পাওয়া যাবে, ইত্যাদি! আসলে চোদ্দ দিন কোয়ারেন্টাইনে বা কোভিড কেয়ার সেন্টারে থেকে অনেকেই বোর হয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য উত্তর ভারতের অনেক জায়গায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীদের জন্য লুডো, দাবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যাতে তাঁদের সময় কাটে।

সে যাক। বিপ্লব দেব কিন্তু নজির গড়ছেন। দেশের প্রথম কোনও মুখ্যমন্ত্রী এই ভাবে কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলিতে পৌঁছে যাচ্ছেন নিয়মিত।

এমনিতে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরাতেই সংক্রমণের হার লাগামছাড়া। মাত্র ৩৬ লক্ষ মানুষের ছোট্ট রাজ্যটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যু হার নিয়েও চিকিৎসক ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সার্বিক ভাবে প্রশাসন যাতে করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্রিয় থাকে সে ব্যাপারে অতি তৎপর মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরও রাজ্য সচিবালয়ের আমলাদের মধ্যে ঝাঁকুনি দিয়েছে।

যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, ত্রিপুরা সরকার প্রথম থেকে গা ছাড়া ভাব দেখানোতেই আজকে এই বিপত্তি। আগে থেকে যদি পরিস্থিতিকে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করত রাজ্য সরকার তাহলে আজকে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।