বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: আমেরিকার লস এঞ্জেলসে দাবানলে মৃতের সংখ্যা এখন ২৪ । দমকা হাওয়ায় আরও অবনতি ঘটছে সেখানকার পরিস্থিতি। আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে দমকলকর্মীদের। আজ এবং আগামীকালও সেখানে দমকা হাওয়া থাকার পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লস এঞ্জেলসে দাবানল শুরু হয় গত সপ্তাহে। দাবানলের গ্রাসে ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে বহু বাড়ি। বহু মানুষ ঘরছাড়া। বাদ যায়নি হলিউড তারকাদের বাড়িও। ঘরবাড়ি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৫০ মিলিয়ন ডলার।
রবিবার রাত থেকে ফের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দিক থেকে শুষ্ক হাওয়া ঘণ্টায় প্রায় ৯৬ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে এসেছে। ফলে আরও দাউদাউ করে জ্বলে উঠছে আগুনের লেলিহান শিখা।
লস এঞ্জেলস কাউন্টির মেডিকেল বিভাগ নিশ্চিত করেছে, এখনও পর্যন্ত ২৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে দাবানলে। ১৬ জন নিখোঁজ। তবে অসমর্থিত সূত্রে এই সংখ্যা আরও বেশি বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে লুটপাটের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ আবার দমকলকর্মী সেজে লুট করতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্নিকাণ্ডে লস এঞ্জেলসের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছড়িয়েছে সেখানকার বাতাসে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ৪০ হাজার একেররও বেশি এলাকা পুড়ে গিয়েছে। আগুনের গ্রাসে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে প্রায় ১২ হাজার বাড়ি। অবশেষে ধ্বংসলীলা কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকের মত, মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল হতে চলেছে এই দাবানল নিয়ন্ত্রণ।
ন্যাশনাল ফায়ার প্রটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে দাবানলের সূত্রপাত হওয়ার ক্ষেত্রে বড় একটি কারণ হলো বজ্রপাত। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার আগুনের ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
দাবানলের স্থান দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় কয়েক মাস ধরে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। ইউএস ড্রাট মনিটরের সর্বশেষ মানচিত্রে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ এলাকা খরামুক্ত। গত বছর এই সময়ে ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার ৯৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ খরামুক্ত ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির (ইপিএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। সান্তা আনা (শক্তিশালী, অত্যন্ত শুষ্ক ঢালু বাতাস) বাতাসের সহায়তায় এ অঞ্চলে শুষ্ক এবং গরম বাতাস হয়তো এমন ভয়াবহ দাবানল।