বিজনসটুডে২৪ ডেস্ক: বলিউড ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের রহস্যময় মৃত্যুর পাঁচ বছর পর আবারও আদালতের দ্বারস্থ হলেন তাঁর বাবা সতীশ সালিয়ান। সম্প্রতি তিনি বম্বে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করে দাবি করেছেন, দিশা আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে গণধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। দিশার বাবার অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছেন শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরে ।
হাইকোর্টে মামলার পুনরুজ্জীবন
সতীশ সালিয়ান আদালতে দাবি করেন, ২০২০ সালের ৮ জুন মুম্বইয়ের মালাডের একটি বিল্ডিং থেকে পড়ে দিশার মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না, এমনকি ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও অসঙ্গতি রয়েছে।
বাবার দাবি, দিশার বাড়িতে সেদিন একটি পার্টি হয়েছিল, যেখানে উপস্থিত ছিলেন আদিত্য ঠাকরে, সুরজ পাঞ্চোলি, ডিনো মরিয়ার মতো ব্যক্তিত্বরা। সেই পার্টিতেই দিশাকে গণধর্ষণ করা হয় এবং পরে তাঁকে জোরপূর্বক ১৫ তলা থেকে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু মুম্বই পুলিশ এবং প্রশাসন তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে, তদন্ত প্রভাবিত করে এবং আদিত্য ঠাকরেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে।
সিবিআই তদন্ত ও পুলিশের ভূমিকা
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই দিশার মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। যদিও সিবিআই জানিয়েছিল যে দুটি মৃত্যুর মধ্যে কোনও যোগসূত্র নেই, তবুও দিশার বাবার অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতি এবং রাজনৈতিক চাপের কারণে প্রকৃত সত্য সামনে আসেনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বদল করা হয়েছে, ফরেনসিক রিপোর্ট ধ্বংস করা হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ পরিবর্তন করা হয়েছে। কেন দিশার মৃত্যুর ৫০ ঘণ্টা পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল? কেন সেদিনই পরীক্ষা করা হয়নি? এই সমস্ত প্রশ্নই এখন নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করছে।
আদালতের সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বম্বে হাইকোর্ট দিশার বাবার পিটিশন গ্রহণ করেছে এবং আগামী সপ্তাহের শুরুতেই মামলার শুনানি হবে। অন্যদিকে, আদিত্য ঠাকরে দাবি করেছেন যে এটি বিজেপি সরকারের চক্রান্ত, তাঁকে বদনাম করার জন্য এই মামলা নতুন করে তোলা হচ্ছে।
সুশান্তের বাবার সমর্থন
দিশার বাবার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবা কেকে সিং। তিনি বলেন, “আমি সম্পূর্ণভাবে দিশার বাবাকে সমর্থন করি। আমার ছেলের মৃত্যুর প্রকৃত তদন্তেরও দাবি জানাই।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বলিউডে ক্ষমতার লড়াই এবং রাজনৈতিক যোগসূত্র দিশার মৃত্যুর তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করেছে। দিশা সালিয়ানের মৃত্যু আজও রহস্যে মোড়া। তাঁর বাবা নতুন করে তদন্তের দাবি জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছেন। আগামী দিনে এই মামলার শুনানি কী মোড় নেয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে।
