বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় দেশের প্রথম ঔষধ শিল্প পার্কে ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে ৪১ টি প্লটের পজেশন হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকল্পের যাবতীয় ভৌত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সিইটিপি এবং আউটলেট ড্রেন তৈরি বাকি রয়েছে।
ঢাকা-ট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউসিয়া মৌজায় ২০০ একরের ওপর এই প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সারের ৬ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট’ প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটির সংশোধিত ব্যয় ৩৩১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা ( বিসিক ) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বিসিক সূত্রে জানা যায়, ঔষধ শিল্প মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মোট ২৭টি কোম্পানির তালিকা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রতিটি কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ ১০ একর ও সর্বনিম্ন ৫ একর করে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মেইন আউটলেট ড্রেন নির্মাণকাজ ৩০ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাস সরবরাহ লাইনের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।
উদ্যোক্তা তহবিলে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার ( সিইটিপি ) ও ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি ( বিএপিআই ) ভারতীয় রামকি এনভাইরো সার্ভিস লিমিটেডকে কার্যাদেশ দিয়েছে। নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আধুনিক এ প্লান্ট থেকে প্রতিদিন ২০ লাখ লিটার বর্জ্য শোধন করা যাবে।
ঔষধ শিল্প সমিতি এপিআই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছে।
২০১০ সালে কাঁচামাল উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল এখানে। নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। মামলাজনিত জটিলতায় জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব, ঔষধ শিল্প মালিকদের অনীহা, নকশায় ত্রুটি ইত্যাদি নানা কারণে পিছিয়ে পড়েছে।
ঔষধ শিল্প দেশের চাহিদার ৯৫ ভাগ পূরণে সক্ষম হলেও তাদের ৯৭ ভাগ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় প্রকল্পটির কাজ। কয়েক দফায় পিছিয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০০৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়।
বিসিক সূত্রে আরও জানা গেছে, ‘অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট ( এপিআই ) পার্কে ঔষধ শিল্পের বিভিন্ন কাঁচামাল উৎপাদনের কারখানাগুলোতে সরাসরি প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বরাদ্দকৃত প্লটে প্রতি শতাংশ জমির মূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার টাকা।
৪২টি প্লটের মধ্যে ১০ বিঘা আয়তনের প্লট ৩৮টি, ৮ বিঘা আয়তনের প্লট চারটি। ৪১টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পজেশনও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্য একটি প্লট মামলার কারণে বরাদ্দ দেয়া যায়নি।
বাংলাদেশে উৎপাদিত ঔষধ রপ্তানি হয় ১৩৩টি দেশে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা ( ডব্লিউটিও ) থেকে বাংলাদেশ প্যাটেন্টেড ঔষধ তৈরির জন্য ২০৩৩ সাল পর্যন্ত ছাড় পেয়েছে স্বল্পোন্নত দেশে হিসেবে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগামীতে ঔষধ রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।