প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষে দেশের একটি মানুষকেও গৃহহীন না রাখার অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারে ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নামে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপকূলবাসীকে বেশি করে গাছ লাগানোর পাশাপাশি প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা মোকাবেলায় দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বানও পুণর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্বোধনের ফলে কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা বৃহৎ এ প্রকল্পে নির্মিত ২০টি পাঁচ তলা বিশিষ্ট ভবনে ৬শ’টি পরিবার নতুন ফ্ল্যাট পেল। প্রতিটি পাঁচতলা ভবনে থাকছে ৪৫৬ বর্গফুট আয়তনের ৩২টি করে ফ্ল্যাট। পর্যায়ক্রমে ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার এখানে ফ্ল্যাট পাবে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বুধবার এই প্রকল্প সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রতিটি পরিবার এখানে ১০০১ টাকার বিনিময়ে একটি প্রায় ৪৫৬ বর্গ ফুটের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্লাট পাবে। যেখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক র্যাম্প, সোলার প্যানেল, বিশুদ্ধ পানির সুবিধা, বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং গ্যাস সিলিন্ডার সম্বলিত চুলার ব্যবস্থা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পে ২৫৩ দশমিক ৫৯ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন ১৩৯টি ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার পুণর্বাসিত হবে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮শ’ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকায় ২০ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ৩৬ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বর্জ্য পরিশোধন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, তীর রক্ষা বাঁধ, ছোট সেতু, ১৪টি খেলার মাঠ, মসজিদ, মন্দির, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলিশ ও ফায়ার স্টেশন, তিনটি পুকুর, নদীতে দু’টি জেটি এবং দুটি বিদ্যুতের সাবস্টেশন থাকবে।’
প্রকল্পে আবাসন, পর্যটন ব্যবস্থা, শুটকি পল্লী বা ‘শুটকি মহল’ এবং সবুজ বনায়নসহ চার ধরনের সুবিধা থাকবে বলেও তিনি জানান।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘এটাই দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য দেশের প্রথম আশ্রয়ণ প্রকল্প। জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারগুলোর জন্য এখানে যে পুনর্বাসন, এটাকে আমরা বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্প বলতে পারি,এ ধরনের প্রকল্প পৃথিবীতে বিরল।’
-বাসস