Home আন্তর্জাতিক দ্বিগুণ গতিতে নতুন করোনা, বিশ্বজুড়ে উৎকণ্ঠা

দ্বিগুণ গতিতে নতুন করোনা, বিশ্বজুড়ে উৎকণ্ঠা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:

ব্রিটেনে দেখা মিলেছে করোনা ভাইরাসের এক নতুন প্রজাতি। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে দেশটির সরকার। এরই মধ্যে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে ব্রিটেন। দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতে, করোনার নতুন এই প্রজাতিটি কোভিড-১৯-এর থেকে দ্রুত সংক্রমিত হয়। তবে বরিস জনসন বলেছেন, করোনার নতুন এই প্রজাতি আগের থেকে বেশি প্রাণঘাতী কি না, তা এখনও প্রমাণিত হয়নি।

ইউরোপের দেশ ডেনমার্কে করোনার নতুন ধরনটি শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে ডেনমার্ক থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুইডেন। ডেনমার্ক ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, ইতালি ও নেদারল্যান্ডসে এই নতুন করোনা স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানককের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, নতুন ধরনের করোনা আসলে মহামারির নিয়মিত বিবর্তন এবং এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরেও নয়। গত রোববার হ্যানকুক বলেছিলেন, নতুন করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, তবে বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এদিকে, ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাজ্য থেকে যাত্রীদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত, ইরান, ও কানাডা। অন্যদিকে, সৌদি আরব, কুয়েত ও ওমান আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সেসব দেশে ঢুকতে দিচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্র এখনো কোনো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। তবে দুটি বিমান সংস্থা ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও ডেল্টা শুধু করোনা নেগেটিভ যাত্রীদেরই নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের উদ্দেশে যেতে ইচ্ছুকদের অনুমতি দিচ্ছে।

অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কয়েকটি দেশ। সেখানে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে সেটি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ধরনটির চেয়ে ভিন্ন।

গত এপ্রিল মাসেই করোনার এক নতুন প্রজাতির সন্ধান পেয়েছিলেন সুইডেনের গবেষকরা।

তারা দাবি করেছিলেন, ওই প্রজাতিটি কোভিড-১৯-এর থেকে দ্বিগুণ গতিতে ছড়ায়। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট রবি গুপ্তার দাবি, করোনার নতুন প্রজাতি থেকে সংক্রমণের ৬ হাজার কেসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের বেশির ভাগই ব্রিটেন ও ডেনমার্কে।

সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা ভাইরাসের নতুন যে ধরন বা স্ট্রেইনের সন্ধান পাওয়া গেছে, তা আরো সহজে ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা আশঙ্কার কারণ। তবে ভাইরাস বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট যে নতুন এই ‘স্ট্রেইন’ করোনা ভ্যাকসিনের জন্য হুমকি বা আরো মারাত্মক কোনো রোগের কারণ হতে পারে কি না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, নতুন এই স্ট্রেইন যে গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে কিংবা করোনার আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন দিয়ে যে এই নতুন ধরনকে মোকাবিলা করা যাবে না- এমন সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।

ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজে থেকে পরিবর্তন হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে, যাকে বলা হয় ‘মিউটেশন’। এই মিউটেশনের মধ্য দিয়ে ভাইরাস যেমন শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, তেমনি অনেক সময় এর শক্তি হ্রাসও পায়।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বেশকিছু স্থানে করোনা ভাইরাসের নতুন এক ‘স্ট্রেইনের’ সন্ধান পাওয়া গেছে। এ কারণে গত শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দেন।

নতুন স্ট্রেইনটি আরো বেশি উদ্বেগের কারণ এটিতে প্রায় দুই ডজন মিউটেশন রয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে আবার বেশ কয়েকটিতে শক্তিশালী প্রোটিন রয়েছে যা মানবকোষে সংযুক্ত ও সংক্রমিত হতে ভাইরাস ব্যবহার করে থাকে।

-এপি, আল জাজিরা ও ডয়েচে ভেলে