দাবী আদায় নাহলে রবিবারে অনশনে শিক্ষকরা
মোরশেদুল ইসলাম, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদ নির্যাতনকারীদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনশণ করেন।
অনশন শুরু করে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের নিচে শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করে। আজ চতুর্থ দিনের মত আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে।
এরপর বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়ানোর মাধ্যমে অনশন প্রত্যাহার করে।
অনশনকারীরা বলেন, আজ ঘটনার চতুর্থ দিন। এখনো প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নি এটি অত্যন্ত দুঃখজনক কথা। এজন্যই আমাদের দাবি আদায়ে আমরা অনশন কর্মসূচি পালন করতে এসেছে। আপনাদের প্রতি সম্মান রেখে রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। কিন্তু রবিবার কোন সিদ্ধান্ত না পেলে অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো।
লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিভাগের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি ও প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখে অনশন স্থগিত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি দাবি আদায় না হয় তাহলে তোমাদের সাথে আমরাও রবিবারে অনশনে বসবো।
এসময় অনশনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও বিভাগের শিক্ষকরা। বিভাগের শিক্ষকরা অনশনকারীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের এই সুশৃঙখল ও যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করে এসেছি। আমরা দেখেছি তদন্ত কমিটি অত্যন্ত পরিশ্রম করে প্রতিবেদন তৈরি করছেন। সুতরাং প্রশাসন আমাদের দাবি পূরণ করবে বলে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি। তাই তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা আজকের মত অনশন কর্মসূচি স্থগিত করো।
এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ড. তপন কুমার সরকার বলেন, আমরা আমাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। আশা করি আজকেই রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দেয়া হবে। আমরা চেষ্টা করেছি একটি যথার্থ প্রতিবেদন তৈরি করতে।
তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য ও প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে একটি পক্ষপাতহীন তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছি। আজ জমা দেব। উপাচার্য এসে সিদ্ধান্ত নিবেন।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন,তোমরা আমাদের সন্তান তুমাদের সমস্যা মানে আমাদের সমস্যা। এখন উপাচার্য স্যার ক্যাম্পাসে নেই। রবিবারে আমরা যদি কোন সিদ্ধান্ত না পায় তবে আমারও তোমাদের সাথে আছি।
এর আগে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাসের নজরুল ভাষ্কর্যের পাদদেশে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়৷ এছাড়াও প্রথমদিন থেকেই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি চলছে।
উল্লেখ্য, রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবের গ্রুপের রাজনীতি না করায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তোলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদ। এদিন মাঝরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে ১৫ জন মিলে ঘটায় এ ঘটনা।