বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: নাক সুড়সুড় করলেই আর নিয়ন্ত্রণে থাকে না হাত? নাক খোঁটার এই অভ্যাস বয়সকালে ডেকে আনতে পারে মহাবিপদ। এমনিই ইঙ্গিত মিলেছে এক গবেষণায়।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নাক খোঁটার অভ্যাস থেকে দেখা দিতে পারে স্মৃতিলোপ বা অ্যালঝাইমার্স! অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্লেম জোনস সেন্টার ফর নিউরোবায়োলজি অ্যান্ড স্টেম সেল রিসার্চের গবেষকরা জানিয়েছেন, নাকের মাধ্যমে একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়া মাথায় প্রবেশ করতে পারে, যা ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগ সৃষ্টি করে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, আমাদের নাকে এক ধরনের রিসেপ্টর থাকে যা ঘ্রাণ নিতে সাহায্য করে। এই রিসেপ্টরগুলি সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। যখন কোনও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নাকে প্রবেশ করে, তখন এই রিসেপ্টরগুলি সেই ব্যাকটেরিয়াকে মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়। এই ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ধীরে ধীরে অ্যালঝাইমার্সের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা আরও জানান, ক্ল্যামাইডিয়া নিউমোনি নামের একটি ব্যাকটেরিয়া এই ঘটনার জন্য দায়ী। তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন, এই জীবাণু নাকের ভিতরে থাকা অলফ্যাক্টরি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছতে পারে। এই স্নায়ুটি থেকেই ঘ্রাণের অনুভূতি তৈরি হয়। বিশেষ করে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে গন্ধের অনুভূতি কমে আসা অ্যালঝাইমার্স রোগের অন্যতম লক্ষণ।
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই জীবাণুর আক্রমণে মস্তিষ্কের কোষে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আর তার থেকেই শুরু হয় স্মৃতিলোপ। বিজ্ঞানীদের আশা এই গবেষণা অ্যালঝাইমার্স প্রতিরোধের নতুন পথ দেখাতে পারে। তাই নাক খোঁটার অভ্যাস ত্যাগ করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা এই রোগ থেকে দূরে থাকার অন্যতম উপায়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও অনেক সমীক্ষা ও গবেষণা হয়েছে খোঁটার এই অভ্যাস। তাতে দেখা গিয়েছে, অভ্যাসটা কমবেশি প্রায় সকলেরই আছে। কিন্তু অনেকেই তা স্বীকার করতে চান না। তবে অনেক সময়েই হাতেনাতে ধরা পড়ে লজ্জায় মাথা কাটা যায়। কিন্তু যাঁদের অভ্যাস রয়েছে তাঁদের আবার তা ভুলতেও সময় লাগে না। কোন ফাঁকে যেন আঙুলটা ঢুকে পড়ে নাকের গর্তে। এই বদ অভ্যাসটি দেখলেই ঘেন্না লাগে।
তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই ঘেন্না লাগা কাজের বেশ খটমটে একটা নাম রয়েছে—‘রাইনোটিলেক্সোম্যানিয়া’। গবেষণা বলছে নাক খোঁটা যদি ‘নেশা’র পর্যায়ে পৌঁছায় তবে তা বেশ বিপদের। কেউ কেউ নাক খুঁটে এমন আরাম পান যে সেটা নেশার দিকে চলে যায়। তাঁরা ক্রনিক ‘রাইনোটিলেক্সোম্যানিয়া’য় আক্রান্ত হয়।