একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি গেলো এক বছরের অধিক সময় ধরে নষ্ট । আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও একজন রেডিওলোজিস্টের অভাবে হয় না পরীক্ষা । এখানে উন্নত মানের অপারেশন থিয়েটার আছে। গাইনি সার্জারি ও সার্জারি কনসালটেন্টের অভাবে বন্ধ অপারেশন।
মোঃনুরুজ্জামান হোসেন, হিলি থেকে: জেলা শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার সর্বদক্ষিণে অবস্থিত হাকিমপুর উপজেলা। হিলি স্থলবন্দর ও উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবায় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে চিকিৎসক আছেন, কিন্তু নেই বিভিন্ন টেস্টের যন্ত্রপাতি। তাতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের।
অত্যাধুনিক ওটি (অপারেশন থিয়েটার) আছে এখানে। কিন্তু নেই সার্জারি কনসালটেন্ট। এ কারণে বন্ধ সব ধরনের অপারেশন কার্যক্রম। অপারেশন থিয়েটার চালুসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
যন্ত্রপাতি সহ কনসালটেন্ট ও এনেসথেসিয়া চিকিৎসকের জন্য চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ কর্তৃপক্ষ।
সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন রোগীর এক্স-রে করতে সর্বোচ্চ খরচ গুণতে হয় ১০০ থেকে দেড়শ টাকা। বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে তা ৫০০টাকার বেশি। আল্ট্রাসনোগ্রামেও সরকারী পরীক্ষার মূল্য ১০০ থেকে ১৫০ টাকা হলেও বাইরে ৫০০ টাকা।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসা সেবার একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি গেলো এক বছরের অধিক সময় ধরে নষ্ট । আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও একজন রেডিওলোজিস্টের অভাবে হয় না পরীক্ষা । এখানে উন্নত মানের অপারেশন থিয়েটার আছে। গাইনি সার্জারি ও সার্জারি কনসালটেন্টের অভাবে বন্ধ অপারেশন। এসব চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
চিকিৎসা নিতে আসা কামরুল নামের একজন রোগী বলেন ,আমাদের মত গরীব মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা সরকারী হাসপাতাল। এখানে আসলে শুধু ঔষধ ছাড়া কিছু মিলে না। না হয় এখানে এক্স-রে, না হয় আল্ট্রাসনোগ্রাম, না অপারেশন। বাই ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বেশি টাকা দিয়ে এসব পরীক্ষা করাতে হয়। এই পরীক্ষাগুলো সরকারী ভাবে সম্ভব হলে খরচ কমতো।
রফিক নামের আর একজন বলেন, এখানে অপারেশন থিয়েটার আছে কিন্তু অপারেশন হয় না । আমাদের এখানে চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন কার্যক্রম চালু করা হোক। কারণ ক্লিনিকে আমরা অপারেশন করতে গেলে আমাদের দ্বিগুন খরচ করতে হয় ।
হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ হারুন বলেন, এই উপজেলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসেন এবং ভারতীয় ট্রাক চালকরা আসে। এখানে এক্সিডেন্ট হলে ত্বরিৎ গতিতে অপারেশন করা যায় না স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে এক্সপার্ট না থাকায়। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যা গুলোর সমাধান করা হবে।
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দাস বলেন, আমাদের অপারেশন থিয়েটার আছে, কিন্তু চালু নেই মুল সমস্যা হচ্ছে এখানে গাইনি ও সার্জারি কনসালটেন্ট না থাকায় অপারেশন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছি না। আমি এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি আশা করছি খুব দ্রুত এটি চালু করা সম্ভব হবে। আর এক্স-রে মেশিন নষ্ট সেটারও চাহিদা আমরা পাঠিয়েছি । আর রেডিওলোজিস্ট না থাকায় বর্হ বিভাগে আল্ট্রাসনোগ্রাম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।