বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
যশোর: স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীকে বিয়ের কৌশলে সৌদি আরবে পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। গত ২৭ নভেম্বর আদালতে তার দাখিল করা পিটিশনটি রবিবার নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছে থানা পুলিশ। ভুক্তভোগী নিজেই করেছেন মামলাটি।
আসামিরা হলো, ওই নারীর স্বামী বাঘারপাড়ার নরসিংহপুর গ্রামের মৃত ছবেদ আলী মোল্লার ছেলে জাকির হোসেন (৪০), শাশুড়ি জাহানারা বেগম (৫৮) ও ননদ সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের ইউনুস আলীর স্ত্রী লাকী (৩৩)।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি স্বামী পরিত্যক্ত ছিলেন। আসামিরা তার বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। ভালো ব্যবহারের কারণে তিনি তাদের কথা বিশ্বাস করতেন। একপর্যায়ে জাকির হোসেন তাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে যায়। কিছুদিন পর আসামিরা তাকে উন্নত জীবনের কথা বলে সৌদি আরবে চাকরির প্রলোভন দেখায়। এরপর জাকির হোসেন নিজের ও তার পাসপোর্ট তৈরি করে সৌদি আরবের ভিসা আনে। ২০২২ সালে ১১ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে তিনি ও জাকির বাড়ি থেকে ঢাকায় যান এবং সৌদি আরবের বিমানে ওঠেন।
এলাহারে আরো বলা হয়েছে, সৌদি আরবে পৌঁছে অজ্ঞাত পরিচয় দুই ব্যক্তির সাথে জাকিরের কথা হয়। ওই দু’জন তাদের অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে জাকির খাবার আনার কথা বলে বাইরে চলে যায়। পরে ওই দুই ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাকে চাপ দেয়। তিনি জাকিরের খোঁজ করলে তারা জানায়, জাকির মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে বিক্রি করে দিয়ে চলে গেছে। সে আর আসবে না। তাদের কথা না শোনায় তাকে অনাহারে কাটাতে হয়। পরে ওই দুই ব্যক্তি তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। এভাবে ৯ মাস তাকে আটকে রাখা হয়। পরবর্তীতে পাশের বাড়ির এক সুদানী নারীর সাথে যোগাযোগ করে তার সহায়তায় তিনি গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরে আসেন।
যশোরে ফিরে তিনি জাকির হোসেনের বাড়িতে যান। কিন্তু সেখানে তাকে তিনি পাননি। তার শাশুড়ি ও ননদ তার হাতে তালাকের নোটিশ ধরিয়ে দেয়। ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন যে সৌদি আরবে পাচারের জন্য জাকির তার স্ত্রী এবং মেয়ের যোগসাজশে বিয়ের কৌশল নিয়েছিল। এরপর তিনি থানায় মামলা করতে যান। থানা পুলিশের পরামর্শে তিনি গত ২৭ নভেম্বর আদালতে পিটিশন দাখিল করেন। পরে আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ রবিবার তার পিটিশনটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করেছে।