নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম থেকে: ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুলে ফাঁসিয়ে দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা, এখন বিনাদোষে হাজিরা দিতে দিতে সর্বস্বান্ত কুড়িগ্রামের রাজারহাটের জহুরুল ইসলাম।
পুলিশের ভুলে গাজীপুরের এক মামলায় একজনের জায়গায় তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে আরেকজনের নামে। অথচ যার নামে প্রতিবেদন গেছে ওই ব্যক্তি জীবনে গাজীপুরের গণ্ডিই মাড়াননি। বিষয়টি নিয়ে এখন দায়সারা বক্তব্য দিচ্ছে পুলিশ।
জহুরুল ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়ব খাঁ গ্রামে। প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করা সত্ত্বেও জহুরুলের জীবনে নেমে এসেছে কালো মেঘের ছায়া। একটি মামলা খেটে খাওয়া এই মানুষটিকে করেছে সর্বস্বান্ত।
জহুরুল জানান, তার নামে এলাকায় আরও বেশ কয়েকজন আছেন। মিল রয়েছে একজনের বাবার নামেরও। ওই জহুরুল ইসলাম ২০১৮ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনের পর ভাঙচুর ও মালামাল লুটের মামলার আসামি। সেই মামলার নামমাত্র তদন্ত করে ভুক্তভোগী জহুরুলের নামে প্রতিবেদন পাঠান রাজারহাট থানার এএসআই আবদুল্লাহ আল মামুন। দুই জহুরুলে বাবার নামে মিল থাকলেও মায়ের নাম যে ব্যতিক্রম, তা আমলেই নেয়নি তদন্তকারী কর্মকর্তা।
জহুরুল জানান, নাম ও পিতার নাম মিল থাকলেও তার মায়ের নাম জহরা খাতুন। আর প্রকৃত জহুরুলের মাতার নাম জরিনা বেগম।
ভুক্তভোগী জানান, জীবনে কখনও ঢাকা কিংবা গাজীপুর না গিয়েও মামলার ভার বইতে হচ্ছে তাকে। যদিও গ্রাম পুলিশের ভাষ্য, অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা পরে জানতে পারেন ভুল করেছেন। কিন্তু এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি তিনি। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় প্রকৃত আসামি জহুরুলের সাথে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় আরেকটি কারখানায় কর্মরত। নিজ এলাকার একজন হেনস্থা হওয়ায় তিনিও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন।
আর ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই আবদুল্লাহ আল মামুন এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি নন। তার দাবি তদন্তে যা পেয়েছেন, সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দিয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বলছেন, বিষয়টি এখন পুরোপুরি আদালতের হাতে।