অধিকাংশ সময় সরকার ব্যবসায়ী ও সরকারের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। কিন্তু এসমস্ত উদ্যোগ একটা সময়ে দ্বিপাক্ষিক দেনদরবারে পরিনত হয়। ফলে এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয় বড় বড় করপোরেট গ্রুপ, আমদানিকরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকে নানা ভাবে বঞ্চিত করছে। আমদানিকারক ও বড় ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসায়ীদের ওপর দোষ চাপান এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারীদের ওপর দোষ চাপান। ফলে ব্যবসা-বানিজ্যে একটি অসমতা বিরাজ করছে। তাই সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদক বিশেষ করে খামারী, কৃষক, সরকারের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া কোন ভাবে সফল হওয়া সম্ভব নয়।
২১ জুন ২০২১ নগরীর নগরীর মোটেল সৈকত সাম্পান হলে ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে ও ক্যাব বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরীর সংঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ইউমেন চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেখা আলম চৌধুরী, নারী নেত্রী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোটে রেহেনা বেগম রানু, দেশ টিভির ব্যুরো চীপ ও কনজ্যুমার রাইটস মিডিয়া ফোরামের সভাপতি আলমগীর সবুজ ও থানা প্র্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাকিয়া খাতুন।
আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব পাঁচলাইশ থানার সাধারন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব নেতা সেলিম সাজ্জাদ, মাজেদ ভাষানী, পোল্ট্রি খামারী মোহাম্মদ রফিক, ক্যাব কর্মকর্তা তাজমুন নাহার হামিদ, শম্পা কে নাহার ও জহুরুল ইসলাম প্রমুখ। পাঁচলাইশ থানা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাকিয়া খাতুন ও ক্যাব চট্টগ্রামের মনিটরিং কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ পোল্ট্রি উৎপাদনে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত বিষয়ে করনীয় বিষয়ে সেশন পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ক্যাব কেন্দ্র্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন ক্যাব নিরাপদ খাদ্য নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করলেও এখনও আশানুরূপ পরিবর্তন আসেনি। পোল্ট্রূ সেক্টরে নানা বিভ্রান্তি দূরীকরণে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দেশের ৩টি বিভাগে ৩টি উপজেলায় ক্যাব প্রকল্প পরিচালনা করছে। যেখানে সরকারের প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তর, খামারী, ও ভোক্তাদের সমন্বিত কর্মপ্রয়াসে পোল্ট্রিতে অ্যান্টিবায়েটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার, নিরাপদ পোল্ট্রি খাবার নিশ্চিত, সুস্থ ও পরিবেশ সম্মত ভাবে পোল্ট্রি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষনে খামারী ও ভোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। একই সাথে পোল্ট্রি সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য দূরীকরণে ভোক্তাদের মাঝে সঠিক তথ্য পৌছানোর মাধ্যমে পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পুরণে ভুমিকা রাখছে। উৎপাদক, সরকার ও ভোক্তাদের সমন্বিত এধরনের উদ্যোগ সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন।
সভায় অতিথিরা বলেন কৃষকের উৎপাদন থেকে ভোক্তার টেবিলে পরিবেশেন পর্যন্ত নিরাপদ খাবার নিশ্চিতের করনীয় বিষয়গুলি যথাযথ ভাবে অনুসরন করা না হলে নিরাপদ খাদ্যও অনিরাপদ হতে পারে। একজন ক্ষুদ্র খামারীকে প্রতিযোগিতামুলক বাজারে টিকে থাকতে হলে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতে মনোযোগী হতে হবে। সরকার কৃষি প্রযুক্তিতে উৎসাহিত করছে এবং এখানে কর রেয়াতসহ নানা সুবিধা প্রদান করছে। আর উৎপাদনের নিত্যনতুন কলাকৌশল উদ্ভাবিত হচ্ছে। সেকারনে একজন খামারীকে কম খরচে উৎপাদনের বিষয়টি দেখতে হবে। একই সাথে পুষ্টিমান ও নিরাপদ পোল্ট্রি ভোক্তার কাছে যাচ্ছে কি না তাও নিশ্চিত করতে হবে। পোল্টি খাবার ও মুরগিতে আন্টিবায়েটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার রোধে ভোক্তাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছাতে সনদধারী পশু চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে। কর্মশালায় ২৫জন খামারী ও ১৫জন স্থানীয় ক্যাব নেতৃবৃন্দসহ ৪০জন অংশগ্রহনকারী অংশনেন।