- শুল্কায়ন নীতিমালা সংশোধনে এনবিআরকে বিপিসি’র অনুরোধ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: দেশে প্রথমবারের মতো আমদানিকৃত ১৫ হাজার টন বাঙ্কার অয়েলের বিপণন কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
নীতিমালার গ্যাড়াকলে পড়ে শুল্কায়ন জটিলতায় লো-সালফার মেরিন অয়েল বিক্রি করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শুল্কায়ন নীতিমালা সংশোধনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে বিপিসি।
জানা গেছে, পরিবেশ দূষণ রোধে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নির্দেশনা দেয়ার পর এই লো-সালফার অয়েল আমদানি করে বিপিসি। বিশ্বব্যাপী বাঙ্কার অয়েল শুল্কমুক্তভাবেই আমদানি করা হয়। কিন্তু ২০১৪ সালের বাঙ্কারিং নীতিমালায় মেরিন ফুয়েলকে শুল্কযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করেছে এনবিআর। কিন্তু শুল্ক দিয়ে তেল বিক্রি করলে বাজার ধরা সম্ভব হবে না বলছেন বিপিসি কর্মকর্তারা। শুল্কমুক্ত তেল বিক্রি করলে বিদেশি জাহাজে পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে কম দামে মেরিন ফুয়েল বিক্রি করতে পারবে। এতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। তবে কাস্টম কর্তৃপক্ষ শুল্কায়ন না করায় বাধার মুখে পড়েছে বাঙ্কারিং খাত।
শুল্কমুক্ত সুবিধায় তেল বিপণন করতে না পারলে বিপিসি ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে বিপিসির অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দেড় লাখ টন মেরিন ফুয়েল আমদানির সিদ্ধান্তের প্রথম পর্যায়ে ১৫ হাজার টন লো-সালফার মেরিন ফুয়েল আমদানি করা হয়। আমদানির আগেই চট্টগ্রাম কাস্টমসকে চিঠি দিয়ে এ অয়েল শুল্কমুক্তভাবে বিপনন করার বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তখন বিষয়টি নিয়ে কোন আপত্তি জানায়নি। কিন্তু আমদানির পর বিক্রিতে শুল্ক আরোপের বিষয়টি জানায় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এনবিআর বিষয়টি আমলে না নিলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের বাণিজ্যে।
বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) এটিএম সেলিম বলেন, বিশ্বের সব দেশে বাঙ্কার অয়েল শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিক্রি হয়। নীতিমালা সংশোধনের চেষ্টা চলছে। রাজস্ব বোর্ড বিষয়টি আমলে না নিলে বাঙ্কার অয়েল বিপণনে দেশের বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। কারণ প্রথমত, লো-সালফার অয়েল বিক্রির মাধ্যমে যে অর্থ লাভের সম্ভাবনা থাকতো তা থেকে আমরা পিছিয়ে পড়বো। এই লো-সালফার অয়েল ব্যবহার করে সমুদ্রগামী জাহাজগুলো। তারা মূলত যে দেশে বাঙ্কার অয়েলের মূল্য কম পায় সেখান থেকেই সংগ্রহ করে। যদি শুল্কমুক্ত ভাবে এই লো-সালফার অয়েল আমরা বিপনন করতে পারি তাহলে এতে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমরা লাভবান হবো।
কাস্টম কর্মকর্তারা জানান, নীতিমালা সংশোধন না করলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় মেরিন ফুয়েল খালাসের সুযোগ নেই। এছাড়া বিপিসি এবং কাস্টম দুটি সংস্থায় সরকারি। সুতরাং শুল্ক দিলে সেই টাকা সরকারি কোষাগারেই জমা হবে। ফলে শুল্কমুক্ত সুবিধা নেওয়ার জন্য সময়ক্ষেপণ করা উচিত নয়।
এদিকে বিপিসি শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে কম দামে তেল বিক্রি করে বাজার ধরার কথা বললেও সেটির সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ বিদেশি জাহাজগুলো সাধারণত সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া থেকে বাঙ্কারিং করে থাকে। ফলে বাংলাদেশ থেকে মেরিন ফুয়েল কেনার সম্ভাবনা কম। এই সুযোগে একটি সিন্ডিকেট তেলগুলো বিক্রি করে ফায়দা লুটবেন। ফলে বিপণনের সাথে জড়িত কয়েকজন শুল্কমুক্ত চাইলেও অনেকেই শুল্কযুক্ত করার পক্ষে।