আরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের আশংকা
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
শুক্রবার রাতের শক্তিশালী ভূমিকম্পে নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে এ পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৮। এদের মধ্যে জাজারকোটে ৯২ জন এবং রুকুম ওয়েস্টে ৩৬ জন। জাজারকোটের ডিএসপি সন্তোষ রুকা সংবাদপত্রকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৪। অর্থাৎ তীব্রতার নিরিখে সেই ভূমিকম্প অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। এতে জাজারকোট ও রুকুম ওয়েস্টে ব্যাপক শত শত নারী-পুরুষ হতাহত হয়েছে বলে আশংকা করা হচ্ছে। খবর স্থানীয় সংবাদপত্র হিমালয়ান টাইমসের।
রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে ৩৩১ কিমি দূরে অবস্থিত। আর ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পে উৎসস্থল ছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৪। এইনিয়ে এক মাসের মধ্যে নেপালে তিনবার বেশ জোরালো ভূমিকম্প হল (ছোটখাটো ভূমিকম্প না ধরে)।৩ অক্টোবর দুপুরেও জোরালো ভূমিকম্প হয়েছিল হিমালয়ের কোল ঘেঁষা দেশে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ঐ ভুকম্পন অনুভূত হয়। চিফ ডিস্ট্রিক অফিসার সুরেশ সুনার জানান, নিহতদের মধ্যে নালগাদ মিউনিসিপালিটির ডেপুটি মেয়র সারিতা সিংও রয়েছেন। যে অবস্থা তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা কর্মিদের সবাই উদ্ধার অভিযানে ঝাপিয়ে পড়েছে।
কম্পন অনুভূত হয়েছে দিল্লি (দিল্লি ও ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওন), উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ ভারতের একাংশেও । দিল্লির মতো কোনও কোনও এলাকার মানুষের দাবি, যথেষ্ট জোরে কম্পন অনুভব করেছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বিহারের বিভিন্ন অংশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভারতের জাতীয় ভূতাত্ত্বিক কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার রাতে যেখানে ভূমিকম্প হয়েছে, তা উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগঢ়ের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ২০৮ কিমি, জোশীমঠের দক্ষিণ-পূর্বে ৩১৭ কিমি, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের উত্তর ও উত্তর-পূর্বে ২৫৩ কিমি এবং উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার উত্তরে ২২৭ কিমি দূরে অবস্থিত।
এতে দিল্লি এবং আশপাশের শহরগুলোতে শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়। দিল্লির বাসিন্দারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝুলন্ত ঝাড়বাতি এবং পাখার নড়ে ওঠার ভিডিও পোস্ট করে। এতে বোঝা যায় ভূমিকম্প কতটা শক্তিশালী ছিল।
ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, রাতেই জরুরি ভিত্তিতে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। জানা গেছে, ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নেপালের পাহাড়ের কোলে থাকা জাজারকোট । সেখানে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ বসবাস করেন। ভূমিকম্পের দাপটে বিপর্যস্ত সমগ্র এলাকা।
জাজারকোটের জেলা আধিকারিক সুরেশ কুমার সুনার সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, রাতেই বহু মানুষকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারের কাজ শুরু করা হয়েছে। বাড়তে পারে হতাহতের সংখ্যা।
এর আগে ৩ অক্টোবর নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.২। প্রায় ২০ সেকেন্ড ধরে কম্পন অনুভূত হয়েছিল রাজধানীতে। ওই মাসের ১৫ তারিখ ফের রাজধানীতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। শুক্রবার রাতে ফের ভূমিকম্প। বারে বারে কম্পনের জেরে বাড়ছে আতঙ্ক।
ভূকম্প বিশেষজ্ঞেরা এই ধারাবাহিক কম্পন নিয়ে অনেক আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তাঁদের পূর্বাভাস, উত্তর-পশ্চিম হিমালয়ে অদূর ভবিষ্যতে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাসের পরে দফায় দফায় কেঁপেছে দিল্লিও।