পঞ্চগড় থেকে মোঃ রবিউল ইসলাম রিপন: বাংলাদেশের উত্তর জনপদ পঞ্চগড় ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে হেমন্ত ও শীতকালে সারাদিনের পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যা নামার পর একটু মানসিক প্রশান্তির আধার ও বিনোদনের একটা বড় মাধ্যম হলো হাটে মাঠের মঞ্চে ধামের গানের আসর। সেই প্রচীন কাল থেকে এ অঞ্চলের মানুষের কাছে নবান্নের উৎসব থেকে শুরু করে পূজা অথবা বিয়ের উৎসবে ধামের গান যোগ করে আসছে আলাদা এক মাত্রা। ধর্ম, বর্ণ, দল ও মতের ভেদাভেদ ভুলিয়ে এলাকার মানুষদের একতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে আসছে এ সম্প্রীতির মঞ্চ।
প্রযুক্তির দাপটে ক্রমেই বদলে যাচ্ছে মানুষের রুচিসহ বিনোদন মাধ্যম। এ অঞ্চলের মানুষের গর্বের প্রতীক এ ধামের গানের আসর সময়ের স্রোতধারায় হারাতে বসেছে তার জৌলুস। তাই আগের মত মূল্যায়ন বা ব্যাস্ততা কোনটাই নেই এখন এ শিল্পের শিল্পীদের। আগের মত জমেনা আসর, তাছাড়া বছরের নির্দিষ্ট একটা সময়ে বেশ হাকডাক থাকলেও বাকী সময়টাতে খোঁজ কেউ রাখেনা বলে অভিযোগ তাদের। অনেকে বদলে ফেলেছেন এ পেশা। আবার অনেকে তাদের মায়া আর ভালোবাসার টানে এখনো কোনমতে শিল্পটিকে আকড়ে ধরে আছেন বলে জানান।
পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় আর পারস্পরিক সম্প্রীতি অটুট রাখতে জেলার সাধারণ মানুষের নির্মল বিনোদনের মাধ্যম ধামের গানের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার ওপর এখনই গুরুত্ব দেওয়াটা জরুরী বলে মনে করছেন এলাকার সৃংস্কৃতি মনা ও সূধীজনেরা। বিদেশী অপসংস্কৃতির বিপরীতে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে নিজেদের কৃষ্টি-সংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দিতে পঞ্চগড়ের ঐতিহ্য ও গর্বের প্রতীক এ শিল্পের প্রতি এ অঞ্চলের মানুষদের আরো যত্নবান হওয়া সহ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসা এ শিল্পের সাথে সম্পৃক্তদের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা জরুরী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।