Home আন্তর্জাতিক পঞ্জশিরের প্রতিরোধ চূর্ণ

পঞ্জশিরের প্রতিরোধ চূর্ণ

শেষ প্রতিরোধটুকুও চূর্ণ করে গোটা আফগানিস্তানেরই দখল নিয়েছে তালিবান ? কাবুল সহ প্রায় পুরো দেশ কব্জা করতে পারলেও পঞ্জশির উপত্যকায় তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল প্রয়াত আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদের বাহিনী । সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহও। গত কয়েকদিন ধরেই তালিবান ও স্থানীয় প্রতিরোধ বাহিনীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ছিল পঞ্জশির। দুপক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেখানে আঞ্চলিক মিলিশিয়া ও প্রাক্তন সরকারি সশস্ত্র বাহিনীর অবশিষ্ট অংশ আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে লড়ছে। কিন্তু তালিবানের তিনটি সূত্রের দাবি, শুক্রবার তারা পঞ্জশির দখল করেছে। এক তালিবান কম্যান্ডার বলেছে, আল্লাহর আশীর্বাদে গোটা আফগানিস্তান আমাদের নিয়ন্ত্রণে। বাধা সৃষ্টিকারীরা হটে গিয়েছে। পঞ্জশির এখন পুরোপুরি আমাদের দখলে।

যদিও এহেন দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। সালে দেশ ছেড়েছেন বলে যে খবর ছড়িয়েছে, তা তিনি নিজেই তোলো নিউজের কাছে খন্ডন করেছেন। বিবিসির জনৈক সাংবাদিক ট্যুইটারে একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করে সেটি সালেহর  পাঠানো বলে জানিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, নিঃসন্দেহে আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছি। তালিবানি আগ্রাসন চলছে। আমরা মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছি। ঠেকিয়ে রেখেছি ওদের। প্রতিরোধ বহাল রয়েছে, চলবে। আমি নিজের মাটিতে, মাটির পক্ষে রয়েছি। তার মর্যাদা রক্ষা করে চলেছি। তাঁর ছেলে এবাদুল্লাহ সালেহ পঞ্জশির পতনের খবর উড়িয়ে বলেছেন, এটা মিথ্যা খবর।

১৫ আগস্ট তালিবান কাবুল দখল করে। তালিবান সূত্রের দাবি, তাদের সহ প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদর নয়া আফগান সরকারের নেতৃত্ব দেবেন। অর্থনীতিকে ভেঙে পড়ার হাত থেকে বাঁচানোই হবে নতুন সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। একদিকে খরা, আরেকদিকে গত ২০ বছরের অন্তহীন সংঘর্ষে বিপর্যস্ত অর্থনীতি। ৩০ আগস্টের মধ্যে মার্কিন সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার আগে প্রায়  ২ লাখ ৪০ হাজার আফগান নিহত হয়েছে। শুধু মানবিক বিপর্যয়ই নয়, একাধিক বিবদমান জেহাদি গোষ্ঠীর, যাদের মধ্যে ইসলামিক  স্টেটও আছে, নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে অশান্তির আশঙ্কা তীব্র আফগানিস্তানে।

বরাদরের সঙ্গে যোগ দেবেন মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুবও, যিনি বাহিনীর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে। শের মহম্মদ আব্বাস স্টানিকজাইও সরকারে থাকবেন। তালিবান সূত্রের খবর, সব সিনিয়র নেতারাই কাবুল পৌঁছেছেন। সেখানে সরকার ঘোষণার চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। হাবিতুল্লাহ আখুন্দজাদা ইসলামের পরিধির মধ্যে ধর্মীয় বিষয় ও সরকার চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে খবর। তালিবান ঐকমত্যের ভিত্তিতে সব গোষ্ঠীকে নিয়ে সরকার গড়ার কথা বললেও তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, শুধুমাত্র তালিবান সদস্যদের নিয়েই তৈরি হবে অন্তর্বর্তী সরকার। ২৫টি মন্ত্রক, ১২ জন মুসলিম পন্ডিতের শুরা বা কাউন্সিল থাকবে। নতুন সংবিধান ও সরকারের ভবিষ্যত্ গঠনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে লয়া জিরগা বসিয়ে আফগান সমাজের প্রবীণ লোকজনের মতামত নেওয়া হবে।-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক