বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
মাদারীপুর: আগামী ২৫ জুন দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শিবচরের বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটে অনুষ্ঠিত হবে জনসভা। সেতু উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন এখানে। সমাবেশ ঘিরে সাধারণ মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। পদ্মাপাড়ের মানুষের মনে বইছে আনন্দ-উদ্দীপনা। আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ।
শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। জনসভাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় ১৫ একর জমির ওপর ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। র্যাব, পুলিশ, সেনা সদস্য, এসএসএফসহ নানান বাহিনীর তৎপরতায় এই অনুষ্ঠানটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রূপ নেবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশে নৌ পথে আসবেন অসংখ্য মানুষ। নৌপথে আসা মানুষের জন্য বাংলাবাজার ঘাটে অস্থায়ীভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ১৫টি ঘাট। লঞ্চ এসে এ সব ঘাটে ভিড়বে। এখান থেকে ৫০০ মিটার দূরে জনসভায় যোগ দেবেন তারা।
বিআইডব্লিউটিএ বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, অন্যান্য নৌঘাট থেকে পন্টুন নিয়ে আসা হয়েছে বাংলাবাজার ঘাটে। নতুন করে ১৫টি ঘাট প্রস্তুতের কাজ শেষের দিকে। লঞ্চ থেকে নেমে মানুষ যাতে সহজেই জনসভাস্থলে যেতে পারে এ জন্য ঘাট থেকে রাস্তাও প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাবাজার ঘাটে লঞ্চ ও স্পিডবোটের পাঁচটি ঘাট রয়েছে আগে থেকেই।
ঘাটের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক (নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, আমরা নতুন করে আরও ১৫টি ঘাট প্রস্তুত করছি। প্রতি ঘাটেই ৪টি বড় লঞ্চ এক সঙ্গে ভিড়তে পারবে। এ ছাড়া ছোট লঞ্চ ৮/১০টি ভিড়তে পারবে। লঞ্চগুলো লোকজন নামিয়ে নদীর মাঝে নোঙর করে রাখবে। সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পদ্মা সেতুর ওপর যানবাহন থামানো ও যানবাহন থেকে নেমে ছবি তোলা অথবা হাঁটা যাবে না। পাশাপাশি সেতুটিতে ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যাবে না। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (২৫ জুন) জাতির স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ২৬ জুন ভোর ৬টা থেকে সরকার নির্ধারিত টোল দিয়ে সেতু পারাপার হওয়া যাবে।
এতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর ওপর অনুমোদিত গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা, পদ্মা সেতুর ওপর যেকোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তোলা/হাঁটা সম্পূর্ণ নিষেধ।
বিশেষভাবে জানানো যাচ্ছে যে, তিন চাকা বিশিষ্ট যানবাহন (রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, অটোরিকশা ইত্যাদি), পায়ে হেঁটে, সাইকেল বা নন-মটোরাইজড গাড়ি যোগে সেতু পারাপার হওয়া যাবে না, গাড়ির বডির চেয়ে বেশি চওড়া এবং ৫.৭ মিটার উচ্চতার চেয়ে বেশি উচ্চতার মালামালসহ যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার করা যাবে না, সেতুর ওপরে কোনো ধরনের ময়লা ফেলা যাবে না।
পদ্মা সেতু একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্থাপনা বিধায় সেতু পারাপারে সর্বসাধারণকে উপরোক্ত নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।