Home কলকাতা প.বঙ্গের তাজপুরে ৩ বছরে গভীর সমুদ্র বন্দর

প.বঙ্গের তাজপুরে ৩ বছরে গভীর সমুদ্র বন্দর

তাজপুর। এখানে হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

কলকাতা:  প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দরপত্র পেশের শেষ তারিখ।

বন্দরটি চালু হলে সেখানে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। নির্মাণের দাযিত্ব কোন সংস্থা পাবে তা চূড়ান্ত হওযার পর ৩ বছরের মধ্যে তা চালুর লক্ষ্য রয়েছে। বর্তমানে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ধামড়া এবং হলদিয়া বন্দরের উপরেই বিভিন্ন শিল্প গোষ্ঠি নির্ভরশীল। তবে তাজপুর বন্দর নির্মাণ হয়ে গেলে এ ক্ষেত্রে  সমস্যা অনেকটাই কমবে বলে আশা করছেন।

১৬,০০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে ।

প্রথম পর্যায়ে ছ’টি বার্থ ও পরের পর্যায়ে আরো নটি বার্থ তৈরি হবে এই বন্দরে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে তৈরি হবে বন্দর। নির্মানকারী সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য বন্দর লিজ দেওয়া হবে। এই বন্দরের সঙ্গে নিকটতম হাইওয়ে সংযোগ করে দেওয়া হবে।

কলকাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর নদী-বন্দর হ‌ওয়ায় ও তার ক্যাচমেন্ট এরিয়ার নাব্যতা কম হ‌ওয়ায় বড় আকারের জাহাজ  প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রমশ গ্রহণযোগ্যতা কমছে কলকাতা বন্দরের একাধিক বার্থের। অন্যদিকে, হলদিয়া বন্দর বলা হলেও এটা মূলত কলকাতা বন্দরের দূরবর্তী ডক হিসাবেই কাজ করে। ১২টি বার্থ থাকলেও নাব্যতা মাত্র ৬/৮ মিটার। ফলে বড় ধরনের কার্গো শিপ হলদিয়া বন্দরেও ঢুকতেও সমস্যা হয়। স্যান্ডহেডে চলে শিপ-টু-শিপ ট্রান্সফার। সেই তুলনায় প্রস্তাবিত তাজপুর বন্দরের নাব্যতা ১৬ মিটার অনেকটাই বেশি।

ইতিমধ্যে ১০ কোম্পানি দরপত্র জমা করেছে। প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দরটি হচ্ছে তাজপুরে। শিল্পপতি গৌতম আদানির পুত্র করণ আদানি বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সাথে সাক্ষাৎ করেন। ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি বন্দর কোম্পানি আদানি পোর্টস এন্ড স্পেশাল ইকোনোমিক জোন ( এপিএসইজেড ) এর প্রধান নির্বাহি করণ আদানি। তিনি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আদানি শিল্পগোষ্ঠি তাজপুরে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বৃহস্পতিবার কলকাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের হলদিয়া ডকের ২ নম্বর বার্থ তুলে দেয়া হয়েছে করণ আদানির হাতে।  তার আগে করণ আদানি প্রায় ৪০ মিনিটের ঐ বৈঠক করেন মমতা ব্যানার্জির সাথে।

কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার লেটার অফ এওয়ার্ড হস্তান্তর করেন করণ আদানিকে। ২০২৪-২৫ এর মধ্যে আদানি গোষ্ঠি বার্থটির উন্নয়ন করবে। সমঝোতার আওতায় বার্থটিকে আধুনিক করে তোলা হবে। যা ভবিষ্যতে কলকাতা বন্দরে কাজকর্ম আরও দ্রুত গতি আনবে। দ্রুত মালপত্র ওঠা-নামানো, পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থার মাধ্যমে পণ্যসম্ভার পরিচালনা করা, নতুন কর্মসংস্থান করা সম্ভব হবে।

এতে আনুমানিক খরচ হবে প্রায় তিন শ’ কোটি টাকা। কাজশেষে এই বার্থটি বছরে ৩৭ লাখ মেট্রিক টন মাল হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জন করবে। আর হ্যান্ডলিং বাবত প্রতি টনে ৭৫ টাকা করে পাবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।