Home চট্টগ্রাম চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

চিটাগাং চেম্বারে পাকিস্তানি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল।

পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের সাথে চিটাগাং চেম্বারে মত বিনিময়

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ এর নেতৃত্বে বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সাথে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

২৩ জানুয়ারি সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ কনফারেন্স হলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা’র সভাপতিত্ব করেন।  বক্তব্য রাখেন দূতাবাসের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাশে জাইন আজিজ, ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি অব পাকিস্তান’র সহকারি পরিচালক সারাং গুল, পাকিস্তানের রিশাদ মতিন গ্রুপের পরিচালক সাজিয়া মতিন, সল্ট হাউস পাকিস্তান’র মোহাম্মদ শফিক, সাংগো এন্টারপ্রাইজ’র বাবর আমিন মালিক, আদিল ট্রেডার্স’র মোহাম্মদ আদিল, রোশান গ্রুপের খালিদ ইজাজ কোরেশি, বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার এসোসিয়েশন’র মুহাম্মদ ফরহাদ উদ্দিন, অনুরা এন্টারপ্রাইজ’র মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, মায়া এক্সপোর্টার এন্ড ইমপোর্টার’র মোঃ মশিউর রহমান সৈকত, রয়েল বিচ রিসোর্ট’র মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন ও জামি এন্টারপ্রাইজ’র মোঃ সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ ও ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার এসোসিয়েশন’র সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তান হাই কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বলেন-পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন। এজন্য বিজনেস টু বিজনেস সম্পর্কোন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। উভয়দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য থাকলেও বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে এ বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হবে। শুধুমাত্র পাকিস্তান থেকে রপ্তানি বাড়ানোর কথা চিন্তা না করে বাংলাদেশ থেকেও কিভাবে রপ্তানি বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যেও কাজ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন-গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়। এরই অংশ হিসেবে দু’দেশের মধ্যে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ শুরু হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ঢাকা-ইসলামাবাদ সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ গ্রহণ এবং ব্যবসার নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের জন্য চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।

চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন-বাংলাাদেশের সাথে পাকিস্তানের ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগতভাবে মিল রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক থাকলেও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পণ্য পাকিস্তানে রপ্তানি হয় না। যেখানে পাকিস্তান বাংলাদেশের ১৯তম আমদানিকারক দেশ এবং পাকিস্তান থেকে প্রতিবছর প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়। তাই উভয়দেশই বাণিজ্য বাধা বিশেষ করে ননট্যারিফ বাধা দূর করে সাফটা এবং ডি-৮ পিটিএ কার্যকর করার মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার আহবান জানান তিনি।

চেম্বার প্রশাসক বলেন-বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান কৃষি নির্ভর দেশ। তাই উভয়দেশের এই সেক্টরে উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিগত এবং নলেজ শেয়ারের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের এই সফরের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত বিনিময় ও যৌথ বিনিয়োগের আহবান জানান।

দূতাবাসের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাশে জাইন আজিজ বলেন-আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেকোন সমস্যা সমাধানে প্রস্তুত পাকিস্তানি দূতাবাস। এজন্য আমদানির ক্ষেত্রে কোন সমস্যা উদ্ভূত হলে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহবান জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন-বাংলাদেশে রয়েছে পাকিস্তানি খেজুর ও মাল্টাসহ পাকিস্তানি ফলের চাহিদা। তাই এসব ফল গুণগতমান বজায় রেখে রপ্তানির আহবান জানান ব্যবসায়ীরা। একই সাথে পাকিস্তানের সাথে ধর্মীয় মিল থাকায় বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোতে পাকিস্তানিদের আমন্ত্রণ জানান তারা।