Home First Lead পাকিস্তান থেকে চাল নিয়ে জাহাজ বহির্নোঙরে

পাকিস্তান থেকে চাল নিয়ে জাহাজ বহির্নোঙরে

পাকিস্তানী জাহাজ এমভি সিবি।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে চাল রপ্তানির তালিকায় যুক্ত হলো পাকিস্তান। সেখান থেকে চালের প্রথম চালান নিয়ে জাহাজ আজ মঙ্গলবার বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। দু’দেশের সরকারের মধ্যে সম্পাদিত সমঝাতা চুক্তির আওতায় চালের জাহাজটি এসেছে। সেখান থেকে আরও একটি জাহাজ চাল নিয়ে আসছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে সেটাও পৌঁছবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন-এর বাল্কক্যারিয়ার এমভি সিবি ওই চাল নিয়ে এসেছে। জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট রেনু শিপিং লাইন্স সূত্রে জানা গেছে, পোর্ট কাসিম থেকে জাহাজটি চাল বোঝাই করেছে। এত ২৬ হাজার টনের অধিক চাল রয়েছে। এই চাল আমদানির মধ্যে দিয়ে শুরু হলো স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের সরকারি পর্যায়ে সরাসরি বাণিজ্য। পর্যায়ক্রমে দুদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সংযোগ চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত নভেম্বরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানী পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম আসে। তবে, তা ছিল বেসরকারি খাতে।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর এই প্রথম শুরু ‍হলো বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরকারি ব্যবস্থাপনায় সরাসরি বাণিজ্য। খাদ্য বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির ব্যাপারে সম্প্রতি ঢাকায সরকারি পর্যায়ে যে সমঝোতা স্মারক সই হয় তার আওতায় প্রথম চালানটি পৌঁছেছে বহির্নোঙ্গরে। মঙ্গলবার বিকেলে জাহাজটি নোঙ্গর ফেলেছে। প্রয়োজনীয় সার্ভে ও নমুনা পরীক্ষার পর চাল খালাস শুরু হবে। এখানে ৬০% খালাসের পর অবশিষ্ট চাল নিয়ে জাহাজটি চলে যাবে মোংলায়। বাকি চাল খালাস হবে সেখানে।

চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূষী চাকমা জানিয়েছেন, যাবতীয় প্রাক খালাস কার্যক্রম সম্পন্ন হলে বুধবার নাগাদ লাইটারিং শুরু হবে। বহির্নোঙর থেকে চাল নিয়ে লাইটারসমূহ সরাসরি সাইলো জেটিতে ভিড়বে।

খাদ্য পরিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আতপ চাল আমদানির জন্য খাদ্য অধিদপ্তর এবং ট্রেডিং কর্পোরেশন অব পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। জি টু জি ভিত্তিতে আমদানির জন্য ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিও বশির শাহ এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক সমঝোতা স্মারকে সই করেন। এর আওতায় প্রথম চালানটি আজ মঙ্গলবার পৌঁছেছে। দ্বিতীয় চালানটি কয়েকদিনের মধ্যে শিপমেন্ট হওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। প্রতি টনের দাম পড়েছে ৪৯৯ ডলার।

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ হওয়া  সত্ত্বেও প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ চাল অন্য দেশ থেকে কিনতে হয়। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ দুই লাখ টন চাল আমদানি করেছিল। সেগুলো আনা হয়েছিল ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং মিয়ানমার থেকে। এবারও এসব দেশ আমদানি হচ্ছে। আসছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে চাল রপ্তানিকারক দেশেসমূহের তালিকায় যুক্ত হলো পাকিস্তান।