বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মৌসুমের শুরুর দিকে ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হলেও এযাবৎকালের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম এই প্রথম- বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোনালী আঁশে সুদিন ফিরেছে। বাজারে পাটের দাম ভালো পাওয়ায় মহা খুশি রাজশাহীর পাট চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানায়, ‘রাজশাহী জেলায় গেল বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ২৬ হেক্টর বেড়ে চাষাবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে। আর ২০১৯ সালে ১৩ হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। এবার পাটের চাষ বেশি আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন ।’
রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা এলাকার পাট ব্যবসায়ী মজিবর রহমান জানান, ‘গেল বছর (২০১৯) এক মণ পাট বিক্রি হয়েছে ১৪শ থেকে ১৫শ টাকায়। পরের দিকে দাম বাড়ে কিছুটা। পাট উঠার শুরুর দিকে ১৬শ থেকে ১৮শ বা ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। পরের দিকে প্রতি সপ্তায় দুই-তিনশ টাকা করে বেড়েছে প্রতি মণে। এ ভাবে বাড়তে বাড়তে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না, পাটের দাম আরও বাড়বে কিনা। কারণ বিশ্ব বাজারে সুতার দাম বেড়েছে, তাই পাটের দাম বেড়েছে বলে বড় বড় আড়ৎদাররা আমাদের জানিয়েছেন।’
বাগমারা উপজেলার মচমইল গ্রামের পাটচাষি আবু বক্কর জানান, ‘৬ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। দাম পাবো না বলে প্রথমের দিকে পাট বিক্রি করে দিয়ে ছিলাম। তবে সেই তুলনায় এখন পাটের দাম দ্বিগুন । ভাবতে পারিনি পাটের এতো দাম হবে।’
রাজশাহী রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক কাজী সাইদুর রহমান জানান, দেশ থেকে প্রতিবছরই পাট রফতানি বেড়েছে। এ কারণে পাটের দামও বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক কোটি ৮৮ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৫.৭৪ ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৯. ৫৫ ডলার ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৫২৮.১৫ ডলারের পাট রফতানি হয়েছে রাজশাহী থেকে। পাটের দাম বাড়ার পেছনে এটিও একটি কারণ বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।
কৃষিবিদ শামসুল হক আরও কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, পাটের দাম ভালো থাকায়, কয়েক বছর ধরে পাটের আবাদ
বেড়েছে। সরকারি পাটকল বন্ধ হলেও পাট বিক্রিতে কৃষকের সমস্যা হবে না। কারণ বে-সরকারি পাট কলগুলো
রয়েছে। এছাড়া বিদেশে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা থেকে মানুষ ফিরে আসছে। তাদের মধ্যে পাটের তৈরি ব্যাগের চাহিদা বাড়ছে। ফলে পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরেছে।
-মীর তোফায়েল।