মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন
হিলি ( দিনাজপুর): হিলিতে অনুষ্ঠিত হলো অনুষ্ঠিত হলো ওঝা কবিরাজদের তন্ত্রে-মন্ত্রের বাহাদুরী প্রমাণের ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলা। ঈদুল আযহার আনন্দ আরও বেশি উপভোগ করতে গতকাল বুধবার উপজেলার কাদিপুর গ্রামের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই পাতা খেলা। খেলা দেখতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকেশত-শত নারী-পুরুষ আর শিশুরা উপস্থিত হয় মাঠ প্রঙ্গনে। বিকেল ৫টা বাজতেই দর্শকের উপস্থিতিতে কানায়-কানায় ভরে ওঠে খেলার মাঠ। শুরু হয় পাতা খেলা।
দক্ষিন কাদিপুর সূর্য শিখা ক্লাব ও পাঠাগার এ খেলার আয়োজন করে। বিকেল ৫টা বাজতেই দর্শকের উপস্থিতিতে কানায়-কানায় ভরে ওঠে খেলার মাঠ। শুরু হয় পাতা খেলা।
প্রতিটি দলে ৩জন করে ৮টি দলে মোট ২৪ জন প্রতিযোগী পাতা খেলায় অংশ নিয়ে শুরু করেন তাদের তন্ত্রমন্ত্র। বিজয়ী হন তান্ত্রিক তছলিম হোসেন। আয়োজকদের পক্ষে বিজয়ী দলকে একটি খাসি উপহার দেওয়া হয়।
খেলা দেখতে আসা মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন বললেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন জনপ্রিয় ছিল পাতা খেলা। আগে এই খেলা বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে আজ কোথাও দেখা যায় না। তাই অনেক দিন পর এমন খেলার কথা শুনে আর লোভ সামলাতে পারিনি। খেলাটি উপভোগ করলাম। খুব ভালো লেগেছে।
কাদিপুর র্সূয শিখা ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই খেলাকে ধরে রাখতে এবং এই খেলার সাথে নতুন প্রজন্মদের পরিচত করতেই এই পাতা খেলার আয়োজন।
অনেক দিন ধরে পাতা খেলা হয়ে আসছে। পাতা খেলা এ অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। প্রাচীন আমল থেকে এই খেলার প্রচলন ছিল। গ্রাম এলাকার লোকজনকে সুস্থ্ বিনোদন দিতে এ খেলাটির বিকল্প নাই। এই খেলায় তন্ত্রমন্ত্রের মাধ্যমে পাতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন তান্ত্রিক বা ওঝা। মন্ত্রের শক্তিতে পরাস্ত কোনো পাতা নির্ধারিত দাগের বাইরে বেরিয়ে এলে জয়ী হন তান্ত্রিক। আর মন্ত্রের শক্তিকে দমন করে কোনো পাতা নিজের সীমানায় অটল থাকলে বিজয়ী হন তিনি।
পাতা খেলাটি এক ধরনের ব্ল্যাকম্যাজিক। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের আসাম রাজ্য থেকে খেলাটি আমাদের দেশে এসেছে। দেশ স্বাধীনের পর নওগাঁতে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় এই খেলা হতো। এখন দুই-এক জায়গায় মাঝে-মাঝে হয়ে থাকলেও আগের মতো বড় পরিসর নেই।’