Home আইন-আদালত পাপুল দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পাপুল দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (১১ নভেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন মামলাটি করেন। মামলায় পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারে সহযোগিতা করায় পাপুল-সেলিনার মেয়ে ওয়াফা ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।

দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাংসদ পাপুল দম্পতি দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠানের’ আড়ালে জেসমিন প্রধান পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করেছেন।

পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েতে যে মামলা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে; বাংলাদেশি সাংসদসহ তিনজন একটি চক্র। তারা কুয়েতে অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশিকে পাঠিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছে।

ফেব্রুয়ারিতে কুয়েতের সংবাদমাধ্যম পাপুল ও তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই মাসের শেষ দিকে এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।

গত ৬ জুন কুয়েতের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) মানবপাচার, ভিসা জালিয়াতি ও অর্থপাচারের এই সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি দেশটিতে বন্দী আছেন। পাপুলকে সহযোগিতার অভিযোগে সে দেশেরও কয়েকজন নাগরিককে অভিযুক্ত করা হয়।

তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়া, অর্থপাচার, মানবপাচার এবং ভিসার অবৈধ লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়। কুয়েতে পাপুলের বিচার শুরু হয় ১৭ সেপ্টেম্বর।

এর আগে ১৫ জুন কুয়েতের সংবাদমাধ্যম জানায়, পাপুল তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, তিনজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ ৫০ হাজার দিনার বা এক লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৮ ডলার উপহার দিয়েছিলেন তিনি।

পাপুলকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অ্যাকাউন্টে পাঁচ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার বা বাংলাদেশি টাকায় ১৩৭ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ টাকা জব্দ করা হয়।

কুয়েতের সিআইডির বরাত দিয়ে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম আরও জানায়, পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আরব টাইমস বাংলাদেশের এক সাংসদসহ তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপরই লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ সহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।

ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সাংসদ পাপুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। পরে কুয়েতের সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে।