বাংলাদেশ জুড়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য প্রাকৃতিক আর মনুষ্যনির্মিত দর্শনীয় স্থান। আর আজ এতে প্রকাশিত হলো পারকী সমুদ্র সৈকত–এর কথা।
পারকী সৈকত চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার থানায় অবস্থিত একটি উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত। স্থানীয়দের কাছে এটির পরিচয় পারকীর চর হিসেবে। এছাড়া অনেকে এটিকে পারকী বিচ বলেও পরিচয় দেন। চট্টগ্রাম শহর থেকে দৃষ্টিনন্দন এই বিচটির দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। তাই মাত্র এক ঘণ্টা সময়ের মাঝেই শহর থেকে চলে আসা যায় এখানে। এজন্য চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দার বাস টার্মিনাল থেকে রাঙ্গাদিয়ার বাসে চড়ে বা রিজার্ভ সিএনজি বা ট্যাক্সিতে করেও পারকীতে যেতে পারেন। এটি মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। অর্থাত্ কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্বদক্ষিণ তীরে এই পারকী সমুদ্র্র সৈকত। চট্টগ্রাম সার কারখানা ও কাফকো যাওয়ার পথ ধরে এই সৈকতে যেতে হয়। পারকী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে দেখা মিলে নয়নাভিরাম নানা দৃশ্য। আঁকা বাকা পথ ধরে বিচের পথে যাবার সময়ই দূরে ছোট ছোট পাহাড়ের দেখা মিলে। এছাড়া নদীর তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ (সিইউএফএল) ও কাফকোর দৃশ্যও পর্যটকদের প্রাণ জুড়ায়। আর পারকী সৈকতে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত ঝুলন্ত তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুটিও দেখবার মতো। সৈকতে প্রবেশের পথেই সরু রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ, সবুজ প্রান্তর আর মাছের ঘের চোখে পড়বে। তাছাড়া এই বিচে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো অসংখ্য ঝাউ গাছ আর ঝাউবনও রয়েছে। এখানে হালকা জলখাবারের ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে সৈকতে ঘোড়া চড়া, রাইডিং বোট, বসার জন্য বড় ছাতা সহ হেলানো চেয়ারের মতো বেশ কিছু ব্যবস্থা। তবে অন্য যেকোনো সৈকতের মতো পারকীরও সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কিন্তু সমুদ্র নিজেই। একটানা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত এই সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখা বা পড়ন্ত বিকেলে সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে হেঁটে বেড়ানোর আনন্দও তাই অতুলনীয়। মূলত শীতকালে বঙ্গোপসাগরের সৌন্দর্য দেখতে পর্যটকদের ভিড় বেশি হলেও বছরের অন্য যেকোনো সময়েও নিরিবিলি সমুদ্রের সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে চাইলে হাতে কিছুটা সময় নিয়ে চলে যেতে পারেন দেশের অন্যতম বড় এই সমুদ্র সৈকতটিতে।