বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কত কিছুইনা খাই আমরা। তবে হাতের কাছে থাকতেও আমরা অনেকেই জানিনা পালং শাকের পুষ্টিগুণের কথা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পালং শাক। হাড়কে করে মজবুত। ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ।
পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এমন অবস্থায় পালং শাকের রস খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করা যায়। শরীরে আয়রনের অভাবের কারণেও রক্তশূন্যতার অভিযোগ থাকতে পারে। যার কারণে সবসময় ক্লান্তি, অলসতা এমনকি শ্বাসকষ্টও অনুভূত হয়।
আমরা সাধারণত পালং শাক সিদ্ধ করে, সালাদ বা তরকারি হিসেবেই রান্না করে থাকি। কিন্তু পালং শাকের জুস খেয়েছেন কি কখনো? পুষ্টিগুণে এর জুড়ি মেলা ভার। তাই তো সারা পৃথিবীর তাবড় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা পালং শাকের গুণ কীর্তনে ব্যস্ত। কারণ, এই শাকে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারের ভাণ্ডার।
তাই পালং শাককে ডায়েটে জায়গা করে দিলে যে অচিরেই স্বাস্থের হাল ফিরবে, তা তো বলাই বাহুল্য! তবে এই শাকের সমস্ত গুণ পেতে চাইলে মাঝে মধ্যে এর জুস করে খেতে পারেন। তাহলেই স্বাস্থ্যের হাল-হকিকত বদলে যাবে। এড়িয়ে চলা যাবে একাধিক রোগের ফাঁদ।
সুতরাং সুস্থ সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব পালং শাকের জুসের একাধিক চমকে দেওয়া গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিন। তারপর নিয়মিত এই পানীয়ের গ্লাসে চুমুক দিন। তাতেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্ত হবে।
চোখের বন্ধু : পালং শাকের জুসে রয়েছে লিউটিন এবং জিয়াজ্যানথিনের মতো উপাদান। এমনকি এই শাক হলো ভিটামিন এ-এর ভাণ্ডার। এসব উপাদান চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ইমিউনিটি বুস্টার : আমাদের অনেকের শরীরেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। পালং শাকের রস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। এতে উপস্থিত একাধিক খনিজ মৌল ও ভিটামিন থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পালং শাকে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন ই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত পালং শাকের জুস খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ : ক্যানসারের মতো একটি জটিল অসুখের ফাঁদে পড়লে রোগীর পাশাপাশি রোগীর পরিবারকেও একাধিক ঝক্কি পোহাতে হয়। তাই যেনতেন প্রকারেণ ক্যানসার প্রতিরোধ করতে হবে। এ কাজে আপনার সফরসঙ্গী হতে পারে পালং শাকের জুস।
কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য : পরিবর্তিত জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে আজকাল মানুষ অল্প বয়সেই হার্ট সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে শুরু করেছে। হৃদরোগ এড়াতে পালং শাক খাওয়া খুবই উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, পালংশাক খাওয়া কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। পালং শাকে রয়েছে অজৈব নাইট্রেট যা রক্তচাপ কমায়, যার ফলে ধমনীর উপরে কম চাপ পড়ে। এর পাশাপাশি পালং শাক খাওয়া হার্টকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
এড়াতে পারবেন ক্রনিক রোগের ফাঁদ : বিপাকের ফলে শরীরে কিছু ক্ষতিকর উপাদান বা ফ্রি ব়্যাডিকেলস উৎপন্ন হয়। এবার সুস্থ থাকতে এসব ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে যত দ্রুত শরীরের বাইরে বের করে দেওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এই কাজে আপনার সহযোগী যোদ্ধা হতে পারে পালং শাকের জুসে মজুত থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই একাধিক দীর্ঘমেয়াদী রোগের খপ্পর থেকে বাঁচতে চাইলে এই পানীয়ের সঙ্গে দ্রুত সন্ধি করে নিন। তাহলেই বদলে যাবে আপনার স্বাস্থ্যের হাল।
ফ্রি র্যাডিক্যালস : আমাদের শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকা প্রয়োজন। ফল ও সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। পালং শাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাওয়া যায় যা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে শরীরে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও পারকিনসনের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য : পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা কিনা মল নরম করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই নিয়মিত এই শাকের জুস খেলে যে সহজেই পেট পরিষ্কার করা সম্ভব হবে, তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই নিশ্চয়ই! এছাড়া এই শাকে রয়েছে এমন কিছু উপাদান, যা কিনা অর্শের প্রকোপও কমাতে পারে। তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা নিয়মিত পালং শাকের জুসের গ্লাসে চুমুক দিতেই পারেন। তাতেই কিন্তু ব্যথা, ফোলা কমবে।
আয়রনের ঘাটতি দূর হবে : পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এমন অবস্থায় পালং শাকের রস খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করা যায়। শরীরে আয়রনের অভাবের কারণেও রক্তশূন্যতার অভিযোগ থাকতে পারে। যার কারণে সবসময় ক্লান্তি, অলসতা এমনকি শ্বাসকষ্টও অনুভূত হয়। পালংশাক সেবন আয়রন বাড়াতে কাজ করে।
নিয়ন্ত্রণে থাকবে ব্লাড প্রেশার : পালং শাকের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট, যা কিনা রক্তনালীকে প্রসারিত করার কাজে সিদ্ধহস্ত। রক্তনালী প্রসারিত হলে যে রক্তচাপ বিপদসীমার নীচে চলে আসবে, তা তো সহজেই অনুমেয়!
শুধু তাই নয়, এই পানীয় হলো পটাশিয়ামের ভাণ্ডার, যা দেহ থেকে সোডিয়ামকে বের করে দিতে পারে। এই কারণেই হাই ব্লাড প্রেশারকে বশে রাখা সম্ভব হয়। তাই উচ্চ রক্তচাপে ভুক্তভোগীরা অবশ্যই এই পানীয়কে ডায়েটে জায়গা করে দিন। তাহলেই আপনারা সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে পারবেন।