বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: পাল্টা শুল্কের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব থেকে আসছে প্রতিরোধ। এর মধ্যে তাঁর ট্যারিফ বা শুল্ক আরোপে ৯০ দিনের বিরতি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আরও জানিয়েছেন, ১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কমাচ্ছেন তিনি।
এই বিরতি বা শুল্ক কমানোর কোনওটাই অবশ্য প্রযোজ্য হবে না শুধুমাত্র একটি দেশের ক্ষেত্রে, চিন। বরং বুধবার চিনের উপর আরোপিত শুল্কের হার আরও বাড়িয়ে ১২৫% করলেন তিনি। এই সিদ্ধান্তগুলির প্রতিটিই ‘অবিলম্বে কার্যকর’ হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘিরে আমেরিকার অন্দরেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। গত সপ্তাহে আমেরিকায় ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে ব্যাপক পরিসরে আন্দোলন হয়েছিল মার্কিন মুলুকে। হাজার হাজার মানুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন। নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি-সহ আমেরিকার সব বড় শহরে মার্কিন জনতা ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি ছিল তাঁর শুল্কনীতিও।
ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘বিশ্ব বাজারের প্রতি চিন যে অসম্মান দেখিয়েছে, তার ভিত্তিতে আমি আমেরিকা কর্তৃক চিনের উপর আরোপিত শুল্ক ১২৫%-এ বাড়িয়ে দিচ্ছি। এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে। আশা করি অদূর ভবিষ্যতে চিন বুঝতে পারবে যে আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশকে লুটপাটের দিনগুলি আর কেউ গ্রহণ করছে না। ৭৫টিরও বেশি দেশ বাণিজ্য, বাণিজ্যে বাধা,

শুল্ক, মুদ্রা কারসাজি এবং অ-আর্থিক শুল্ক সম্পর্কিত বিষয়গুলির সমাধানে মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছে। এই দেশগুলি, আমার পরামর্শ মেনে কোনওভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়নি। এই সত্যের ভিত্তিতে আমি শুল্কে ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করছি। এই সময়ের মধ্যে পারস্পরিক শুল্ক ১০%-এ কমিয়ে আনব। এটাও অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সর্বশেষ ঘোষণার পরপরই ওয়াল স্ট্রিটের প্রধান সূচকগুলি বেড়েছে।
ট্রাম্পের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, যে যে দেশ আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক বা বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করতে চায়, তাদের কথা শুনতে ইচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের জন্য ১০%-এর বেসলাইন ট্যারিফ কমানো হবে। ৭৫ টিরও বেশি দেশ শুল্ক আরোপের শর্তাবলী নিয়ে আলোচনার জন্য আমেরিকাকে ফোন করেছে। ওয়াশিংটন তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। এই আলোচনার জন্যই নাকি ৯০ দিনের বিরতি নেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এটা ট্রাম্পের ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর চেষ্টা। পরিস্থিতি খারাপ দেখলে সব সময়ই ট্রাম্প পিছিয়ে আসেন। এই ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। এ বার ট্রাম্প প্রশাসন একে তাদের জয় হিসেবে দেখানর চেষ্টা করবে। আসলে বিশ্ব জুড়ে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে, তাতেই পিছু হটতে বাধ্য হলেন ট্রাম্প।
ওয়াশিংটন পোস্টের অ্যাসোসিয়েট এডিটর মার্ক ফিশার বলেছেন, ‘তিনি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, ভয় ছড়িয়ে দেন এবং পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেলে পিছু হটেন।’