বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
রাঙ্গামাটি: মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে এবারও পাহাড়ের হচ্ছে না পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি। ইতোমধ্যে সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠনগুলো উৎসব না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘরে ঘরে পালন করা হবে দিনটি।
গেল বছরও একই কারণে বৈসাবী উৎসবের আয়োজন ছিল না। বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি পাহাড়ে ঐতিহ্যবাহী ‘বৈসাবী’ উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলায় পরিণত হয়।
প্রতি বছর ১২ এপ্রিল নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব। পুরানো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণে গ্রামে-গ্রামে চলে নানা আয়োজন। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পাহাড়ি জাতি-গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান আনন্দ র্যালি, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী পানি উৎসব ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় গড়িয়া নৃত্যের আয়োজন করে থাকে।
ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু নামে বর্ষবরণের উৎসব পালিত হয়। এ তিন ভাষার থেকে উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়। ১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসব পালন করে আসছে।
ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, আসাম, চাক ও রাখাইনসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ও অবস্থানকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিন থেকে ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকে।
বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনন্ত ত্রিপুরা জানান, করোনার এমন পরিস্থিতিতে উৎসব আয়োজনের কোন সুযোগ নেই। এবারও আমরা কোন আনুষ্ঠানিকতা রাখিনি। সকলকে ঘরে ঘরে ছোট পরিসরে দিনটি উদযাপনের জন্য বলছি। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাটা জরুরি।
মারমা উন্নয়ন সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মংপ্রু চৌধুরী বলেন, এই মুহুর্তে উৎসব পালনের চেয়ে নিজেরা বেঁচে থাকাটা জরুরি। প্রশাসন থেকেও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আছে। আগামীতে করোনার প্রকোপ কমে গেলে আমরা দ্বিগুণ আনন্দে উৎসব আয়োজন করবো।