বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
পটুয়াখালী: পায়রা বন্দরের অদূরে অবস্থিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ২৬ টি জাহাজ ভিড়েছে। এসব জাহাজ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোঝাই নিয়ে সরাসরি ভিড়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে।
পায়রা বন্দর থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ২.৫ নটিক্যাল মাইল। রাষ্ট্রীয় নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চায়নার ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন যৌথভাবে কলাপাড়ার ধানখালীতে এক হাজার দুই একর জমির উপর দেশের প্রথম কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ নির্মাণ করছে। ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট গত ১৪ মে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছিল জানুয়ারিতে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে প্রথম জাহাজ ভিড়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর। ২০ হাজার টন কয়লা নিয়ে এসেছিল জাহাজটি ইন্দোনেশিয়া থেকে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র্রটির যাবতীয় লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছে এ এম এম এস লজিস্টিক্স অ্যান্ড র্যাডিয়েন্ট শিপিং লিমিটেড । আমদানি করা মেশিনারিজ ও অন্যান্য পণ্য বন্দর থেকে খালাস ও সাইটে পৌঁছানোর কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের ভাইস-চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েল বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধিকে জানান, হংকংয়ের পতাকাবাহী এমভি ঝিং হাই টং-৮ ইন্দোনেশিয়ার বালিক পানান বন্দর থেকে ২০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে নোঙর ফেলে। এরপর আরও ২৫টি জাহাজ এসেছে এ পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে ৬টি জাহাজ আসছে কয়লা নিয়ে। ২৪ হাজার টন থেকে সাড়ে ২৪ হাজার টন কয়লা থাকে প্রতিটি জাহাজে। পায়রা বন্দরের পাইলট এবং টাগবোট গিয়ে মাদারভেসেলগুলোকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে। আর জেটিতে কয়লা খালাস করা হয় গ্যান্ট্রি দিয়ে। দ্রুতগতিতে জাহাজ থেকে চলে যায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডে।
জানান, দ্বিতীয় ইউনিটটি চালুর পর্যায়ে কয়লার চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ এখনকার তুলনায় দ্বিগুণ সংখ্যক জাহাজ আসবে কাঁচামাল নিয়ে। সেই প্রস্তুতি রয়েছে। একসঙ্গে জেটিতে দু’টি জাহাজ ভিড়ানো এবং দু’টির কয়লা খালাস ও ডাম্পিং সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে।
বর্তমানে কয়লার চাহিদা দৈনিক প্রায় ৬ হাজার টন। দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে চাহিদা দাঁড়াবে ১২ হাজার টন।
জানা যায়, মূল পরিকল্পনা অনুসারে প্রথম ইউনিট ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২০ সালের জুনে উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল।
চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে গেছে। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ চলছে এখন পুরোদমে। ডিসেম্বরের মধ্যে উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার পিটি বায়ার্ন রিসোর্স টিবিক’র সাথে ১০ বছরের চুক্তি করা হয়েছে কয়লা সরবরাহের জন্য। আর কয়লা পরিবহনের চুক্তি রয়েছে জার্মানির ওলডেনডরফ-এর সঙ্গে।বিসিপিসিএল-এর সাথে এ জন্য ৫ বছরের চুক্তি হয়েছে।
কয়লার জাহাজ যাতায়াতের জন্য প্রয়োজন ১২ মিটার ড্রাফট। সেই ড্রাফট এখানে নেই। পরিবহন খরচ হ্রাসের জন্য আগামীতে বড় মাদার ভেসেলে কয়লা নিয়ে আসা হবে আন্দামান পর্যন্ত। সেখান থেকে লাইটারিং করে পায়রায় আনা হবে কয়লা। তাতে ব্যয় অনেক কমে যাবে।