Home সারাদেশ পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

লালমনিরহাট থেকে সংবাদদাতা: এখানে পুলিশ হেফাজতে রবিউল ইসলাম (২৫) নামে এক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

মৃত রবিউল ইসলাম খান সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের দুলাল খানের ছেলে। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর বাজারে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নববর্ষ উপলক্ষে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর বাংলা বাজার এলাকায় বৈশাখী মেলার আয়োজন করে স্থানীয়রা। সেখানে এলাকাবাসী জুয়ার আসর বসালে পুলিশ খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় রবিউল ইসলাম রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। অভিযানকালে রবিউল ইসলাম খানসহ দু’জনকে আটক করে পুলিশ। রবিউল জুয়া খেলেননি এমন দাবি করে পুলিশ ভ্যানে উঠতে আপত্তি জানালে পুলিশের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু পুলিশ মারধর করে একপর্যায়ে তাকে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, পুলিশ আটক দুজনকে ভ্যানে উঠানোর চেষ্টা করলে রবিউল ভ্যানে উঠতে রাজি হয়নি। পরে পুলিশ তাকে বেদম মারপিট করে। এতে রবিউল সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে পুলিশ তাকে পাজা কোলা করে তাদের ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের নির্যাতনের কারণেই রবিউল অসুস্থ হয় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে তারা জানান।পুলিশের নির্যাতনে ঘটনাস্থলেই রবিউলের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনরা অভিযোগ করছেন।

এদিকে রবিউলের মৃত্যুর খবরে রাত ২ টার পর থেকে উপজেলার মহেন্দ্রনগরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়রা।সড়ক অবরোধকারীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে নির্যাতনকারী পুলিশকে দ্রুত আইনের আশ্রয়ে আনার দাবি জানান।এসময় তারা পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করে।পরে ভোর চারটার দিকে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম অবরোধকারীদের তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালে অবরোধকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, মেলায় জুয়া চলছে এমন খবরে পুলিশ অভিযান চালায় এবং দুজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের থানায় আনার সময় একজন অসুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসার জন্য সরাসরি হাসপাতালে নেওয়া হয়।হাসপাতালে চিকিৎসক অসুস্থ ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে রেফার্ড করে।উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে সে মারা যায়। তিনি জানান এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রবিউলের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, এক সপ্তাহে আগে রবিউল বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। মেলার খবর পেয়ে বেড়াতে যান সেখানে। রবিউল জুয়া খেলেননি, তাই পুলিশ ভ্যানে উঠতে রাজি হচ্ছিলেন না। এ জন্য পুলিশ তাকে মারধর করে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশের লাথিতে অণ্ডকোষে আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এতে পাত্তা না দিয়ে বলেন, রবিউল অভিনয় করছেন।