Home আন্তর্জাতিক পাক হেফাজতে বিএসএফ জওয়ান: অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর আকুলতা

পাক হেফাজতে বিএসএফ জওয়ান: অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর আকুলতা

সংগৃহীত ছবি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কলকাতা: চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পাকিস্তানি রেঞ্জারদের হেফাজত থেকে মুক্তি পাননি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) কনস্টেবল পূর্ণমকুমার সাউ। গত বুধবার পঞ্জাবের গুরুদাসপুর সেক্টরে দায়িত্ব পালন করার সময় ভুল করে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে চলে যান তিনি। এরপর তাঁকে আটক করে পাক রেঞ্জাররা। এখনও তাঁকে ভারতের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।

বিএসএফ সূত্রের খবর, ঘটনার পরে একাধিক দফায় ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে। বিষয়টি দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি কূটনৈতিক স্তরেও গড়িয়েছে। দিল্লি থেকে ইসলামাবাদে ভারতের হাই কমিশনের মাধ্যমে পাক সেনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

সূত্রের দাবি, পাকিস্তান প্রাথমিক পর্যায়ে পূর্ণম সাউয়ের পরিচয় যাচাই করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। ফলে তাঁর প্রত্যর্পণ বিলম্বিত হচ্ছে। এমনকি, স্থানীয় পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে, ‘এক ভারতীয় সেনা সদস্য অনিচ্ছাকৃতভাবে সীমান্ত পার হয়ে গিয়েছিলেন।’

পরিবারের উদ্বেগ এবং স্ত্রীর লড়াই

এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত পূর্ণমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী সাউ। সোমবার তিনি চণ্ডীগড় হয়ে পঠানকোট যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। সেখান থেকে বিএসএফ এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তাঁর সোজাসাপ্টা বক্তব্য, ‘‘স্বামীর খোঁজ না পেলে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সামনে দাঁড়াব।’’

রজনীর সঙ্গে পরিবারের আরও চার সদস্য রওনা হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে পূর্ণমের বাবা ভোলানাথ সাউও রয়েছেন, যিনি বারবার প্রশাসনের কাছে ছেলেকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার আর্জি জানাচ্ছেন।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং সহানুভূতি

রবিবার বিজেপি নেতা অর্জুন সিং এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পূর্ণমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অর্জুন সিং তাঁদের আশ্বস্ত করেন, প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।

ভোলানাথ সাউ বলেন, ‘‘আমি চাই, শুভেন্দু অধিকারী আমাদের বাড়িতে আসুন। তা হলে আমার মনে হবে, সরকার সত্যি আমাদের পাশে রয়েছে।’’

বিশেষজ্ঞদের অভিমত

সীমান্ত বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রমের মতো ঘটনায় সাধারণত দ্রুত মুক্তির বন্দোবস্ত হয়, যদি তা অনিচ্ছাকৃত বলে প্রমাণিত হয়। তবে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার জেরে (বিশেষত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক গোলাগুলির পর) এমন ঘটনায় প্রক্রিয়া কিছুটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

দিল্লি থেকে ইঙ্গিত, কূটনৈতিক চ্যানেলে কথাবার্তা চলছে এবং পূর্ণমকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত জোরদার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।