বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: পোপ ফ্রান্সিসের বয়স ছিল ১২। আর্জেন্টাইন এই কিশোরের তখন নাম ছিল হোর্হে মারিও বার্গোগলিও।একই ক্লাসে পড়তেন এমিলিয়া দামোন্তে নামে এক কিশোরী। তার প্রেমে সেই সময় হাবুডুবু খাচ্ছিল বার্গোগলিও। চিঠি লিখে তাকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল সে। নাটকীয় ভাবে জানিয়েছিল, যদি এমিলিয়া তাকে বিয়ে না করে, তবে সে যাজক হয়ে যাবে। ধর্মকর্ম করবে।
২০১৩ সালে ৭৬ বছর বয়সে পোপ হয়েছিলেন ফ্রান্সিস। এমিলিয়াও তখন ৭৬ বছরে পা দিয়েছেন। সেই সময়ই এমিলিয়া তাঁদের এই গোপন প্রেমের খবর ফাঁস করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘তখন আমরা ১২ বছরে পা দিয়েছি। থাকতাম আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ারেসের উপকণ্ঠে। বার্গোগলিও একদিন আমায় একটা চিঠি দিল। আমায় বিয়ে করতে না পারলে ও সংসার ত্যাগ করবে। ধর্মযাজক হয়ে যাবে।’
তবে বার্গোগলিও-কে না বলে দিয়েছিলেন এমিলিয়া। কারণ বার্গোগলিও-র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হোক, চাননি তাঁর বাবা-মা। তাঁদের আলাদা করতে এমিলিয়ার বাবা-মা মরিয়া ছিলেন।
এমিলিয়া বলেছিলেন, ‘আজ আর আমার লুকানোর কিছু নেই। ওটা ছিল অবুঝ প্রেম। আমাদের সম্পর্ক ছিল পবিত্র। তবে আমার মা–বাবার বাধার কারণে সেই প্রেম আর এগোয়নি। চিঠিতে একটা লাল রঙের ছাদওয়ালা বাড়ির ছবি এঁকেছিল ও। ওর স্বপ্ন ছিল, বিয়ের পর এমন একটি ঘর কিনে আমায় নিয়ে সেখানে থাকবে। সেই চিঠি পড়ল বাবার হাতে। তিনি তো রেগে আগুন। আমায় মারধর করলেন। এর পর থেকে ওকে আর কখনও দেখিনি। মা–বাবা আমাকে ওর থেকে দূরে দূরে রাখতেন। ওর সঙ্গে দেখা হোক, তা চাইতেন না। এক পর্যায়ে আমিও চাইতাম, ও যেন আমার থেকে দূরে থাকে। তাই হয়েছিল। ধীরে ধীরে দূরে সরে গিয়েছিল ও।’
২০১৩ সালে পোপ ফ্রান্সিসের ছোট বোন মারিয়া এলেনা বার্গোগলিও জানিয়েছিলেন পোপ হওয়ার কোনও স্বপ্ন ছিল না ফ্রান্সিসের। মারিয়াও চাননি তাঁর ভাই পোপের আসনে বসুন।
মারিয়া বলেছিলেন, ‘আমার ভাই মৃদুভাষী। পৃথিবীর ১২০ কোটি রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানের নেতা হওয়ার কোনও বাসনাই ওর ছিল না। কখনও ও পোপ হওয়ার স্বপ্ন দেখত না। আজ ও সারা বিশ্বের ক্যাথলিকদের নেতা নির্বাচিত হয়েছে। এখন ওকে সীমাহীন নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে হবে। আমি নিজেও চাইনি, আমার ভাই পোপ হোক। কারণ ওর ঘাড়ে অনেক দায়িত্ব বর্তাবে। ও আমাদের থেকে আরও দূরে চলে যাবে।’