বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মানব সভ্যতার একেবারে শুরুতে পোশাকের ধারণা ছিল না। নগ্ন অবস্থাতেই বাস করতেন নীলগ্রহের আদি বাসিন্দারা। পরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জামাকাপড়ের ধারণা তৈরি হয়েছে। একদম শুরুতে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্য গাছের ছাল-বাকল দিয়ে পোশাক তৈরি করত মানুষ। ধীরে ধীরে সময় এগিয়েছে। বর্তমানে পোশাক শুধু ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার অস্ত্র কিংবা লজ্জা নিবারণের উপায় নয়, বরং তা রীতিমতো ফ্যাশনের অঙ্গ। কিন্তু জানেন কি, এই ২১ শতকেও এমন জায়গা রয়েছে, যেখানকার বাসিন্দারা পোশাক পরেন না?
হ্যাঁ, ব্রিটেনের হার্টফোর্ডশায়ারে রয়েছে স্প্লিলপ্ল্যাটজ (Spielplatz) নামের একটি গ্রাম, যেখানে বাসিন্দারা কেউই কোনও রকম পোশাক পরেন না (Nudist village)। এমনটা নয় যে তাঁরা অত্যন্ত দরিদ্র, তাই পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। বরং, গ্রামটির বাসিন্দারা প্রত্যেকেই উচ্চশিক্ষিত এবং সচ্ছল পরিবারের অংশ। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ক্লাব, রেস্তোরাঁ, পানশালার মতো সমস্ত অত্যাধুনিক পরিষেবা রয়েছে গ্রামটিতে। তা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় বস্ত্রহীনভাবে দিন কাটান এখানকার বাসিন্দারা।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বস্ত্রহীন জীবনযাপন এই গ্রামের ঐতিহ্য। ১৯২৯ সালে ইসাল্ট রিচার্ডসন এই গ্রামটি আবিষ্কার করেছিলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত গ্রামের মহিলা-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে কেউই কোনও রকম জামা কাপড় পরেন না।
বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে দিব্যি যোগাযোগ রয়েছে এই গ্রামের বাসিন্দাদের। পড়াশোনা এবং অন্যান্য কাজে গ্রামের বাইরে যেতে হলে স্প্লিলপ্ল্যাটজের বাসিন্দারা পোশাক ব্যবহার করেন। তবে কাজ মিটে যাওয়ার পর যে মুহূর্তে গ্রামে ফিরে আসেন, তখন থেকে ফের পোশাকবিহীন অবস্থাতেই থাকতে শুরু করেন তাঁরা। ছোট থেকেই পরস্পরকে নগ্ন অবস্থায় দেখে বড় হওয়ার কারণে স্প্লিলপ্ল্যাটজের মানুষজন বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি বোধ করেন না। বরং, তাঁদের দাবি, এতে তাঁরা এক অদ্ভুত স্বাধীনতার স্বাদ পান।আগে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল বেশ কিছু সামাজিক সংগঠন। এই অদ্ভুত প্রথা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। যদিও গ্রামটির ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে সম্মান দিয়ে বর্তমানে সেই দাবি থেকে সরে এসেছে সংগঠনগুলি।
স্প্লিলপ্ল্যাটজে বেড়াতে যাওয়ারও সুযোগ রয়েছে। তবে শর্ত একটাই, পোশাক ছাড়াই থাকতে হবে সেখানে। তবে নিতান্তই কেউ যদি অস্বস্তি বোধ করেন এবং সেই নিয়ম মানতে না চান, তাহলে তিনি কাপড় পরতে পারেন। এছাড়াও শীতকালেও জামাকাপড় পরতে বাধা নেই। কী ভাবছেন, একবার ঘুরে আসবেন নাকি?