বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলায় দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের একটা অংশ ‘অনুদান’ হিসেবে চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।
রবিবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এফবিসিসিআইয়ের যৌথভাবে আয়োজিত ৪১তম পরামর্শ সভায় এ প্রস্তাব করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।
ভার্চুয়ালি এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘‘মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এ ধাক্কা যদি আরেক প্রান্তিক অব্যাহত থাকে, তাহলে এ দেশের ছোট-বড় শিল্পমালিকরা বিপাকে পড়তে পারেন। ক্ষতি মোকাবিলায় প্রণোদনার ছাড় করা অর্থের একটা অংশ ‘অনুদান’ হিসেবে দেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে বৃহৎ শিল্প মালিকদের জন্য দেওয়া প্রণোদনার ছাড় করা অর্থের ৫ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ অনুদানে রূপান্তর করা উচিত।’
তিনি বলেন, কৃষি খাতে যেসব প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার অর্থ পেয়েছে, তাদেরও ৫০ শতাংশ অর্থ অনুদান হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মোট এক লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এ অর্থের সিংহভাগই ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। খাতভিত্তিক এ প্রণোদনার একটি অংশ অনুদান হিসেবে চান ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া আগামী দুই বছরের মধ্যে আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর ও আগাম ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানায় এফবিসিসিআই। সংগঠনটি মনে করে, করোনার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। সবকিছু আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে অগ্রিম আয়কর ও আগাম ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নগদ টাকার প্রবাহ বাড়বে।
এদিকে তৈরি পোশাক রফতানিতে উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান। এছাড়া পোশাক রফতানিতে নগদ সহায়তার ওপর উৎসে কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘জাতীয় বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবি-দাওয়া বা চাওয়া যুক্তিসঙ্গত। অযৌক্তিক কোনও চাওয়া থাকে না। তারা দেশের নিবিড় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ব্যবসায়ীদের সুযোগ বাড়িয়ে দিলে দেশও উন্নত হয়।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো মানে দেশকে শক্তিশালী করা। এটা দেশের স্বার্থে করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিলে একদিকে রাজস্ব আয় বাড়বে, অপরদিকে কর্মসংস্থানও বাড়বে। তাই তাদের দাবিগুলো যথাসম্ভব বিবেচনা করা হবে।’