Home Second Lead দেড় কোটি লিটার দুধ অবিক্রীত প্রতিদিন

দেড় কোটি লিটার দুধ অবিক্রীত প্রতিদিন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: চলমান করোনাভা্ইরাস পরিস্থিতির জেরে দেশে প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি লিটার দুধ অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। এর বাজার মূল্য প্রায় ৫৭ কোটি টাকা।

এই তথ্য বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ইমরান হোসেন বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে দুধ প্রসেসর কোম্পানিগুলো প্রতিদিন খামারিদের কাছ থেকে  ১৩ লাখ ৫৯ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করে, যা দেশের মোট উৎপাদনের মাত্র ৫ শতাংশ। অবশিষ্ট ২ কোটি ২৮ লাখ ৩৬ হাজার লিটার দুধ খামারিরা বিক্রি করেন বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ও বাসাবাড়িতে। দেশের বর্তমানে পরিস্থিতিতে দোকানপাট বন্ধ ও জনজীবনে অস্থিরতার কারণে দুধ বিক্রি ব্যাহত হচ্ছে। অনেক জায়াগায় ১০-১২ টাকা দরেও দুধ বিক্রি করতে পারছেন না খামারিরা। এতে প্রান্তিকসহ সাধারণ খামারিরাও বর্তমানে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। সরকার ও বড় কোম্পানিগুলোকে খামারিদের সহযোগিতার আহ্বান জানান ইমরান হোসেন।

বলেন, ‘দেশের তিনটি বড় কোম্পানি প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করে। এসব কোম্পানির গুঁড়োদুধ তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১০ থেকে ১২টি কোম্পানির রয়েছে দুগ্ধজাত পণ্য তৈরির সক্ষমতা। তাই দুগ্ধ শিল্প রক্ষায় সরকার ও কোম্পানিগুলো খামারিদের সহযোগিতায় এগিয়ে না এলে ৫০ শতাংশের বেশি খামার বন্ধ হয়ে যাবে। এতে অর্ধকোটিরও বেশি খামারি বেকার হয়ে পড়বেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়: চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ দুধ সরবরাহ করছেন দেশীয় খামারিরা। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বিপাকে পড়েছেন তারা। খামারিরা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। এতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ লাখ লিটার দুধ অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। মাসিক হিসাবে যা প্রায় এক হাজার ৭১০ কোটি টাকা।

মিষ্টির দোকান  সচল রাখার দাবি

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন।

বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ-এর হাতে স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরী ফার্মারস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইকবাল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ও মিল্ক ভিটার চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন হায়দার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরি এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মালিক মো. ওমর (বাবু), প্রান্তিক খামারি মো. জালাল উদ্দিন রোকন ও মাকসুদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি পেশ

স্মারকলিপিতে বলা হয়: করোনা ভাইরাসের কারণে চট্টগ্রাম নগরী ছাড়াও পটিয়া, কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন এলাকার দেড় হাজার দুগ্ধ খামারি বিপাকে পড়েছেন। ইতোমধ্যে মিল্ক ভিটা দুধ সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়া গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি ও মিষ্টির দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মূলত খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

মিল্ক ভিটার কারখানা চালু রেখে প্রান্তিক খামারিদের থেকে অধিক দুধ সংগ্রহ, সরকারিভাবে ঘোষিত বন্ধের সময়  দুধ (শিশু খাদ্য) বাজারজাত ও বিতরণ করার সুযোগ প্রদান, শিল্পকে টিকে রাখতে গো-খাদ্যের দোকান খোলা রাখা ও গো-খাদ্যউচ্চমূল্যে বিক্রির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ , বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋনের কিস্তি কমপক্ষে  তিন মাস বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয়।