জাহিদ মাহমুদ
মেহেরপুর: অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন দোদুল যাকে বলা হয় মেহেরপুর মুজিবনগরের স্বপ্নদ্রষ্টা ও আধুনিক মেহেরপুরের জনক, যিনি স্বপ্ন দেখেন অত্যাধুনিক মেহেরপুর, বিশেষ করে স্বাধীনতার সূতিকাগার মুজিবনগর গড়ার। সেই স্বপ্নসারথীর হাত ধরে পূরণ হয়েছে নাগা মাঠের চাষিদের দেখা স্বপ্ন।
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের ছোট্ট একটি জেলা মেহেরপুর তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর জেলা তার মধ্যে বাংলাদেশের অস্থায়ী বা প্রথম রাজধানী খ্যাত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত মুজিবনগর একটি ঐতিহাসিক উপজেলা।
মেহেরপুর জেলায় ২ টি সংসদীয় আসন তার মধ্যে মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর নিয়ে মেহেরপুর ১ আসন। এই আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন।
মেহেরপুরে মুজিবনগর উপজেলা কৃষি নির্ভর এলাকা উপজেলার সবথেকে বড় ফসলের মাঠ নাগার মাঠ যে মাঠকে ঘিরে চলে মুজিবনগর উপজেলা ও মেহেরপুর সদর উপজেলার ২০/৩০ টি গ্রামের মানুষের চাষাবাদ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কিন্তু প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পুরো মাঠটি তলিয়ে যায় পানির নিচে হারিয়ে যায় প্রায় অর্ধ লক্ষ কৃষকের স্বপ্ন। বড় নাগার মাঠ থেকে গৌরিনগর গ্রামের ভিতর দিয়ে ভৈরব নদীতে পানি নিষ্কাসনের জন্য একটি খাল থাকলেও কালের পরিক্রমায় সেটি ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় মাঠের পানি নিষ্কাসন।
মেহেরপুর ১ আসনের এমপি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন কৃষকদের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নকে ফিরিয়ে আনতে এবং মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের কৃষি খাতের উন্নয়নকল্পে নাগাবিলের খাল পুন:খননের উদ্যোগ গ্রহন করেন।
তারই প্রচেষ্টায় গত ৩ এপ্রিল বড়নাগা হতে ভৈরব নদী পর্যন্ত প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৪ কিলোমিটার খালের পুন:খননের উদ্বোধন করা হয় এবং ৯০ দিনের মধ্যে খালটির পুন:খননের কাজ সমাপ্ত হয়।
নাগা মাঠের চাষী উপজেলার গৌরিনগর গ্রামের ৫৫ বছরের ইমদাদুল হক বলেন নাগার মাঠে আমার ৭ বিঘা জমি আছে আমি দীর্ঘদিন ধরে চাষ আবাদ করে আসছি বোরো মৌসুমে এ মাঠে ধান ভাল হয়, কিন্তু আমন মৌসুমে জোর বর্ষা হলে ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। তাছাড়া এই মাঠে দুটি ফসল ছাড়া আর কোন ফসল চাষ করা যায়না। প্রতি বছর আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। আমরা স্বপ্ন দেখতাম নাগামাঠে বিভিন্ন ফসলের চাষ করব, আমরা আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে থাকব।
মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার আনিছুজ্জামান খান জানান উপজেলার নাজিরাকোনা গ্রাম হতে বিদ্যাধরপুর পর্যন্ত ১২৮৫ হেক্টর আবাদি জমি আছে নাগামাঠে। এই পরিমান জমির অধিকাংশ প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডুবে যাওয়ার কারনে ফসল খুব বেশি হয় না। নাগার মাঠের পানি নিষ্কাসনের খাল খননের ফলে এখন প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত প্রায় ৫ হাজার ৭০০ মেট্রিকটন ধান উৎপন্ন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি অফিস।