আমীরুল মোমেনিন
ঢাকা: বিদায়ী এপ্রিল মাসে রেমিটেন্সের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২৭ দিনে এসেছে ১৮২ কোটি ২০ লাখ ডলার। এপ্রিলে রেমিটেন্স হতে পারে ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় ব্যাংকাররা আশা করছেন যে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে রেমিটেন্সে ৭/৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। সেই হিসেবে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার বা ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত বছরগুলোতে ঈদকেন্দ্রিক রেমিট্যান্স পাঠানোর ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদের আগের প্রত্যাশিত ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সকে খুব বেশিও বলা চলে না।
তা ছাড়া গত বছর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোজার ঈদ পালিত হয়। ফলে এপ্রিল এবং মে উভয় মাসেই রেমিট্যান্স বেড়েছিল। এবার ঈদের আগে পুরো এক মাসে রেমিট্যান্স পাঠাতে পেরেছেন প্রবাসীরা। কিন্তু সেই তুলনায় রেমিট্যান্স কমই এসেছে। গত বছর এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, মে মাসে এসেছিল ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।করোনার আগের বছরগুলোতেও ঈদের আগে আরও রেমিট্যান্স বাড়তে দেখা গেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রোজার ঈদ পালিত হয়, এর আগের মাস মে মাসে রেমিট্যান্স ৩৭ শতাংশ বেড়ে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলারে উন্নীত হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর প্রথম দিকে রেমিট্যান্স প্রবাহে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও মহামারির মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন দেখা যায়। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার পাঠান প্রবাসীরা; যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা দেখা যায়। প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৮১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে আসে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অক্টোবরে আসে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নভেম্বরে আসে আরও কম, ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল । ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ওই মাসে তা ছিল ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার । তার আগের দুই মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছিল সরকার। গত জানুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে; অর্থাৎ কোনো প্রবাসী এখন ১০০ টাকা দেশে পাঠালে যার নামে পাঠাচ্ছেন, তিনি তুলতে পারছেন ১০২ টাকা ৫০ পয়সা ।