Home কৃষি প্রবাসী রাসেলের বাগানে ৫০ লাখ টাকার আনারস

প্রবাসী রাসেলের বাগানে ৫০ লাখ টাকার আনারস

তিমির বনিক
২০১৮ সালে ব্যাংক কর্মকর্তা রইছ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা ঢাকাদক্ষিন দত্তরাইলের বাসিন্দা আবদুল মতিন চান মিয়ার ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রাসেল আহমদ। শ্রীমঙ্গলে সারি সারি আনারস বাগান দেখে তার শখ জাগে বাগান করার। রইছ উদ্দিন  আশ্বাস দেন সহযোগিতা করতে। ভাইদের সাথে আলোচনা করে উদ্যোগ নেন বাগান সৃজনের।

উত্তরাধিকার সূত্রে বিশাল ভূসম্পত্তির মালিক আবদুল মতিন চান মিয়া। চান মিয়ার ৮ ছেলে। বাড়ির পাশে ৬টি টিলায় ৬০ বিঘা জায়গা নিয়ে শুরু হয় আনারস লাগানোর কাজ। শ্রীমঙ্গল থেকে রইছ উদ্দিন সরবরাহ করে দিতেন চারা। একে একে টিলা আচ্ছাদিত হতে থাকে আনারস গাছে। প্রথম বছর খুব বেশি আনারসের ফলন মেলেনি। কিন্তু যেটুকু পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো বিতরণ করে দেয়া হয় এলাকার লোকজন, আত্মীয়-স্বজন, মসজিদ, মাদ্রাসা আর এতিমখানায়। গেল বছর পূর্ণতা পায় বাগান। আনারসে আনারসে ভরে ওঠে বাগান। প্রায় ৬৫ হাজার আনারস বিক্রি করে আয় হয় ৩০ লক্ষ টাকা। সেই সাথে আবদুল মতিন চান মিয়া আনারস বাগানের সুনামও ছড়িয়ে পড়ে মৌলভীবাজার থেকে সিলেটজুড়ে। ভাল ফলন হওয়ায় আর ও ১০ বিঘা জায়গায় রোপন করা হয় আনারসের চারা। এবছর ও বাগানে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে।

বাগানের পরিচালক রাসেল আহমদ ও মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের রইছ উদ্দিন আশা করছেন, এবার এক লক্ষের বেশি আনারস বিক্রির। আনারস বিক্রি থেকে আসবে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। আনারস বাগানে সারাদিনই দেখতে আসা পর্যটকদের ভিড়। তবে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে ঢল নামে পর্যটকদের। গাড়ি ও মোটর সাইকেল নিয়ে হাজারো দর্শণার্থী আসেন বাগানে। বিশাল বাগানের টিলাভর্তি আনারস দেখে মুগ্ধ হন তারা।
চান মিয়া আনারস বাগান শুধু পর্যটকদের মধ্যেই সাড়া ফেলেনি। বাগানের সফলতা এলাকার মানুষকেও প্রভাবিত করেছে। পড়ালেখা করে চাকুরির পেছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী করছে এলাকার তরুণদের। ঢাকাদক্ষিণ এলাকাজুড়ে রয়েছে অসংখ্য টিলা। তাই আবদুল মতিন চান মিয়া আনারস বাগানের সফলতা দেখে এখন অনেকেই ভাবছেন নিজেদের টিলায় বাগান করার। এতে এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করছেন স্থানীয়রা।
চারপাশে উঁচু-নিচু টিলা। টিলাজুড়ে শুধু সারি সারি আনারস গাছে। প্রতিটি গাছের মাথা উঁচু করে আছে আনারস। সবুজ আর হলুদ আনারসের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা বাতাস। এখানকার বাতাসই যেন বয়ে বেড়াচ্ছে আনারস সুমিষ্ট সুভাস। এমন দৃশ্য সিলেটের ঢাকাদক্ষিণ দত্তরাইলের আবদুল মতিন চান মিয়া আনারস বাগানের। বাগানের মনোরম দৃশ্য আর সুমিষ্ট আনারসের টানে এখন প্রতিদিন হাজারো দর্শক ভিড় করছেন এই বাগানে। আনারস বাগানটি এখন পরিচিতি পেয়েছে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে। বাগানের আনারস বিক্রি করে এবার ৫০ লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।